দেশে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বৃহস্পতিবার বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সদ্য সমাপ্ত কম্বোডিয়া সফরের বিস্তারিত জানাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। আগাম নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পার্লামেন্টরি সিস্টেমে (সংসদীয় ব্যবস্থা) যেকোনও সময় কিন্তু ইলেকশন
হয়। তবে আমরা এমন কোনও দৈন্যদশা বা সমস্যায় পড়িনি যে আগাম ইলেকশন দিতে হবে।’ তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন করেছি; চ্যালেঞ্জ দিতে পারি, তা কেউ করতে পারে নাই। আমাদের সেই উন্নয়নগুলো এগিয়ে নিতে চাই। আরেক প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনে আসা প্রত্যেকটা দলের কর্তব্য। যে দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না; এটা সেই দলের সিদ্ধান্ত। এতে আমাদের কিছু করার নেই। যারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্বাস করে না তারা নির্বাচনে আসবে না। তিনি এক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগ নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি অপাত্রে ঘি ঢালি না। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি একটি নির্দলীয় সরকার চায়; এক্ষেত্রে তাদের নির্বাচনে আনতে সরকার প্রধান হিসেবে কোনও অবদান রাখবেন কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কার সঙ্গে আলোচনা? কিসের প্রস্তাব! একবার প্রস্তাব দিয়ে যে ঝাড়িটা খেলাম আর প্রস্তাব দেওযার ইচ্ছা নেই। তাকে আর প্রস্তাব দেওযার দরকার আাছে বলে মনে করিনা। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসতে চায় আসবে, এটা তাদের পার্টির সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। এত সাধাসাধির দরকার কি হলো; আমি বুঝতে পারলাম না। শেখ হাসিনা বলেন, আর যাই হোক আমি প্রধানমন্ত্রী। তার ছেলে যখন মারা গেলো; আমি তার বাড়িতে গেলাম। কিন্তু আমাকে ঢুকেতে দেওয়া হলো না। প্রধানমন্ত্রী প্রায় আট মাস পর বৃহস্পতিবার কোনো সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। ভারত সফর শেষে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি। তিন দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রোববার কম্বোডিয়া যান। এই সফরকালে সেখানে শেখ হাসিনার নানা কর্মসূচিতে যোগদান ছাড়াও নয়টি সমঝোতা ও একটি চুক্তি সই হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সঙ্গে। মঙ্গলবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক গড়ে তুলতে গভীর ভূমিকা রাখবে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দূঢ় হবে। সম্প্রতি আমার কম্বোডিয়া সফরে দুই দেশই লাভবান হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, যেহুতু তারা প্রতিবেশি দেশ; আমি চাই প্রতিবেশি দেশের সাথে সদভাব থাকুক। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি; কিন্তু তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। মিয়ানমার সরকার স্বীকার করেছে-একটা কমিটি করা হবে; তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।