আর্জেন্টিনায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য বিশ^বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নত বিশ^কে বিগত ১০টি ডব্লিউটিও মিনিস্টিরিয়াল কন্ফারেন্সে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডব্লিউটিও মিনিস্টিরিয়াল কন্ফারেন্সের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে উন্নত দেশগুলো বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক উন্নত দেশ তা দিচ্ছে না। এ বিষয়ে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করে যেতে হবে, গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলোর বাস্তবায়ন হয়। মন্ত্রী বলেন, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য উন্নতবিশে^র শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা, সেবা খাতের সার্ভিস ওয়েভার, রুলস অফ অরিজিন বিষয়ক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ এলডিসির সাথে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর এ দাবির পক্ষে বাংলাদেশের জোড়ালো অবস্থান থাকবে। উন্নত বিশ^কে বিশেষ করে দোহা ডিকলারেশনের পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল (৯ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায়) আর্জেন্টিনা রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্স এ অনুষ্ঠিতব্য ডব্লিউটিও-এর ১১তম মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সের পূর্বে এলডিসি মিনিস্টিরিয়াল মিটিং-এ স্বল্পোন্নত দেশসমুহের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আয়োজিত মিটিং-এ বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে এ সব কথা বলেন।
এসডিসি গ্রুপের বর্তমান সমন্বয়ক কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী প্যান সোরাসাক (চধহ ঝড়ৎধংধশ)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিটিং-এ এলডিসির ৪ বারের সফল সমন্বয়ক তোফায়েল আহরেমদ বলেন, বিশ^ জনসংখ্যার ১২ ভাগ মানুষ এলডিসি ভুক্ত দেশের, অথচ বিশ^ বাণিজ্যে এলডিসি ভুক্ত দেশগুলো অবদান মাত্র ১ ভাগ। এ পরিস্থিতি উত্তরনের জন্য রপ্তানি বাণিজ্যে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর বিশ^বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। ডব্লিউটিও-এর ১১তম মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সের ১০ থেকে ১৩ ডিসেম্বর এ অনুষ্ঠিত হবে।
পরে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় ২.৪৫ মিনিটে) আর্জেন্টিনায় নিযুক্ত বৃটিশ রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এমসি-১১ এ যোগদানরত বৃটিশ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড বিষয়ক স্টেট মিনিস্টিার হন গ্রিজ হ্যান্ডস(ঐড়হ এৎবম ঐধহফং)-এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। একঘন্টাব্যাপী বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশে বৃটিশ বিনিয়োগের চিত্র তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বৃটেন নানা ভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে আসছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দের জন্য তিনি বৃটেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী ব্রেকজিটের পরও বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার আহবান জানান। এছাড়া ২০২১ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে মধ্য আয়ের দেশে প্রবেশ করার পর জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানের জন্য বৃটিশ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।
বৃটিশমন্ত্রী জাতিসংঘের বিশেষ ৫ম হিউম্যান রাইট কান্সিলে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন দানের বিষয়টি তোফায়েল আহমেদের কাছে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সফররত বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, জেনেভা বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভিসি বিজয় ভট্রাচার্য, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. মুনীর চৌধুরী এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।