অপরাধ বিচিত্রা ডেস্কঃ আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হবে। ঠিক কত দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে তার কোনো সময়সীমা এই চুক্তিতে উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শনিবার সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। সেখানে খুঁটি-নাটি, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। সেটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। মূল কথা হলো, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারের সাথে যে চুক্তিটি হয়েছে এটা রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে পাঠানোর প্রথম পদক্ষেপ। এরপর আরো পদক্ষেপ আছে। সেগুলোর কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে। আবুল হাসান বলেন, মিয়ানমারের সাথে আলোচনা চলছে। তাদের ফেরত পাঠানোর কাজে কোনো জটিলতা দেখা দিলে আমরা তাদের সাথে আবার আলোচনায় বসব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, রাখাইন যেহেতু এখন মানুষ বসবাসের উপযোগী নয়। এখন সেটাকে উপযোগী করে তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাখাইন রাজ্যের জন্য তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চুক্তি হয়েছে। অবশ্যই আইন অনুযায়ী হয়েছে। তবে আইন দিয়ে কিছুই হয় না। আইন মানলে ঠিক আছে, আইন না মানলে কী করার আছে? উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি চেকপোস্টে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা। এ ঘটনার জের ধরে দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমারের দাবি, রোহিঙ্গারা বাঙালি এবং তারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ইতিহাস বলে, তারা যুগের পর যুগ ধরে ওই অঞ্চলে বাস করছে।
সর্বশেষ রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে হতবাক হয় বিশ্ব। জাতিসংঘকে একে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করে। অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কিছুটা নমনীয় হয় মিয়ানমার সরকার এবং ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার কথা বলে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির আলোচনা চলছে। এ উদ্দেশ্যে প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটি সফর করেন।