আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনজীবীদের বৃহত্তর স্বার্থে, আইন পেশার মান ও মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে কেবল মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বার কাউন্সিল সনদ প্রদান করা উচিত। মেধা ও যোগ্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরণের শৈথিল্য কাম্য নয়। এটি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতেই হবে। এ বিষয়ে তিনি সব ধরণের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।
আজ রাজধানীর অফিসার্স ক্লাব অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল তালিকাভুক্ত নবীন আইনজীবীদের সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি (দায়িত্বরত) মো. আব্দুল ওহহাব মিঞা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে গণতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় করা এবং দেশে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান সরকারেরও অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। জনগণের প্রত্যাশাও সেটাই এবং এটি তাঁদের সাংবিধানিক অধিকারও। জনগণের এ প্রত্যাশা ও সাংবিধানিক অধিকার পূরণে আইনজীবী সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ আইনজীবীগণ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় চালিকা শক্তি হিসেবে অবদান রাখেন। সেজন্য আইন পেশার মানন্নোয়নে ও আইনজীবীদের কল্যাণার্থে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল গঠন করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি শক্তিশালী ও আধুনিক বার কাউন্সিলের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে আরো শক্তিশালীকরণে কাজ করছে-উদ্দেশ্য আইন পেশার মানন্নোয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধি। এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট চত্ত্বরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি ১৫-তলা বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ চলছে। সুপ্রিম কোর্ট চত্ত্বরে এ ভবন নির্মাণের বিষয়ে ইতোমধ্যে অনুমোদন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভবনটির নক্সা প্রণয়নের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। একনেকে অনুমোদিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
আইন পেশায় দক্ষতা অর্জনে নিয়মিত পড়াশোনা এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরী উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ ছাড়া পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জন করা দুরহ। মানুষের আত্মবিকাশের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে প্রশিক্ষণ। তাই বার কাউন্সিলের নতুন ভবন নির্মিত হলে এ ভবনে আইনজীবীদের জন্য কন্টিনিউয়াস লিগ্যাল এডুকেশন কোর্স চালু রাখার মাধ্যমে সারা বছর আইনজীবীদের ট্রেনিং প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আদালত অঙ্গনরে সুষ্ঠু পরবিশে সংরক্ষণ, স্বাধীন বচিার ব্যবস্থার সুফল জনগণরে মাঝে ছড়য়িে দওেয়া এবং মানবাধকিার প্রতষ্ঠিায় গঠনমূলক ভুমকিা পালনরে পাশাপাশি সমাজে শান্তি প্রতষ্ঠিা এবং অসহায়দরে আইনি সবো দয়োর জন্য নবীন আইনজীবীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।তিনি বলেন, সমাজে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে আইন পেশার আচরণবিধি সবসময় মেনে চলতে হবে। সমাজের সকলের কাছে সৎ, আদর্শবান ও বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা লাভে সচেষ্ট হতে হবে, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, অ্যাটোর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট স.ম. রেজাউল করিম অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন।