সংগঠক ও সমাজকর্মী
চেয়ারম্যান, বাংলার চোখ স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন
সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নির্ভর নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জীবনযাপন অর্থনৈতিক-সামাজিক-সংস্কৃতিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে বিশেষত মতামতের ভিত্তিতে নগর পরিকল্পনা প্রথমত করা জরুরী। এটাই এই নগরীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ফাউন্ডেশন নির্মাণ করবে।
নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে নগর কর্তৃপক্ষের প্রধানতম অভিষ্ট লক্ষ্য। নাগরিকতার প্রাথমিক আবশ্যক শর্তই হলো তার নাগরিক মর্যাদা। অন্যদিকে একজন নাগরিককে কোন নগর যখন তার অবশ্য প্রাপ্য অধিকারগুলো বিনা হয়রানিতে বুঝিয়ে দেয়, তখন নগরের প্রতিও তার দায়িত্ব বর্তায়। অধিকার আর কর্তব্যের এই পারস্পরিক লেনদেনের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে নাগরিক মর্যাদার বোধ। গড়ে উঠবে একটা একটা সুস্থ্য বাসযোগ্য নগরী।
দুঃখ জনক হলেও রংপুর মহানগরীর বাসিন্দারা সমানভাবে সেই নাগরিক মর্যাদার অধিকারী নন। এই নগরীকে বাসিন্দারা আপন ভাবতে পারে না। এই নগরে শিশুদের শৈশব চুরি হয়ে যায় চার দেয়ালের মাঝে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ এর অভাবে, নারীর জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের বিপরীতে তা দিয়েছে অবমাননা, অবহেলা আর আতঙ্ক। দরিদ্রতর নাগরিকদের কাছে নূন্যতম অধিকার পৌঁছে দেয়ার কোন উদ্যোগ নেই। অধিকারহীন নাগরিকেরা নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে থাকেন উদাসীন, সুযোগ পেলেই নাগরিক শৃংখলা ভাঙ্গা এখানে রীতি হয়ে দাঁড়ায়। অথচ এই অধিকারগুলো ভোগ এবং দায়িত্বগুলো পালনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠে একটা সুস্থ্য জনপদ, নাগরিক অর্জন করেন তার মর্যাদা। ফলে শুধুমাত্র নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত মেয়র কিংবা অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের উপর যেকোন ব্যর্থতার দায় দেয়া ঠিক হবে না। কারণ নাগরিক হিসেবে তার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হলে সমভাবে একজন তারও সমান অংশগ্রহণ প্রয়োজন নগর উন্নয়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের। এই উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পারে একটি সুন্দর বাসযোগ্য নগরী প্রতিষ্ঠা করতে। সর্বোপরি, নাগরিক এবং নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একটা মানবিক, প্রকৃতি বান্ধব, বৃদ্ধ-শিশু বান্ধব, নারীর জন্য উপযুক্ত, তরুণ প্রজন্মের বিকাশের উপযোগী কর্মচঞ্চল রংপুর নগরীই আমাদের প্রত্যাশা।
এমন রংপুর মহানগরী চাই, যেখানে একটা মানবিক, বাসযোগ্য, দূষণমুক্ত, যানজটমুক্ত, নগরীতে তরুণ-তরুণীরা যেখানে তাদের সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাবেন, প্রবীনদের জন্য যে নগর হবে শ্রদ্ধাপূর্ণ, নারীরা যেখানে মর্যাদা ও নিরাপত্তার সাথে দিনে রাতে চলাফেরা করতে পারবেন, শিশুরা যেখানে গুরুত্ব পাবে ভবিষ্যতের প্রজন্ম হিসেবে। শ্রমজীবি মানুষের চাহিদাগুলো কিংবা নগরীর সকল ওয়ার্ডের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের চাহিদাগুলো মেটানোর বিষয়ে যে নগরী উদাসীন থাকবেনা।
আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমি রংপুর নগরীকে এমনই দেখতে চাই।