স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) রওনক জাহান কর্তৃক নিজের অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা ধামাচাপা দিতেই অফিসে দায়িত্বশীল স্টাফ থাকা সত্বেও তাদেরকে বাদ দিয়ে রহস্য জনক কারণে নি¤œ শ্রেনির কর্মচারী (সার্টিফিকেট সহকারী) আফতাফ জাহান সিদ্দিকীকে দিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম বাসায় বসে পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উল্লেখিত সার্টিফিকেট সহকারী আফতাফ জাহান সিদ্দিকী কর্তৃক জমির নামজারীসহ ভুমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগটি এখন অফিসে ওপেন সিক্রেট। তাই এলাকার সচেতন ও ভুক্তভোগী মহল মতামত ব্যক্ত করেছেন যে, এসি(ল্যান্ড) অফিসে সিসি ক্যামেরা থাকার কারণেই কি সার্টিফিকেট সহকারী আফতাফ জাহান সিদ্দিকীকে দিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম সপ্তাহের সিংহভাগ সময় বাসায় বসে পরিচালনা করছেন এবং গাইবান্ধা শহরের প্রভাবশালী ও ডানপন্থি একটি রাজনৈতিক দলের নেতার পুত্র আফতাফ জাহান সিদ্দিকীকে ঢাল হিসেব ব্যবহার করছেন (!)
অভিযোগে প্রকাশ, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কাজলঢোপ গ্রামের আবুল হোসেন নামের জনৈক ব্যক্তি জমির নামজারীর জন্য আবেদন করেন। যার নম্বর- ২৮১/২০১৭-১৮। আবেদনকারী আবুল হোসেন এসি(ল্যান্ড) অফিসে বেশ কয়েক মাস ধর্ণা দিয়েও নাম জারী করতে না পেরে ঢাকা থেকে প্রকাশিত অপরাধ বিচিত্রা ম্যাগাজিন পত্রিকার স্মরণাপন্ন হলে বিষয়টি সরেজমিনে যাচাই করতে পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মোনায়েম হোসেন মন্ডল গত ১২ সেপ্টেম্বর/২০১৭ইং আবেদনকারীর পক্ষ হয়ে এসি(ল্যান্ড) অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানালে সার্টিফিকেট সহকারী আফতাফ জাহান সিদ্দিকী নামজারীর খরচ বাবদ টাকা দাবী করেন। সাংবাদিক মোনায়েম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আফতাফ জাহান ফাইলটি অসৌজন্যমূলক আচরণের ভঙ্গিতে টেবিলে ছুড়ে ফেলে দেন। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে এসি(ল্যান্ড) রওনক জাহানকে জানালে আফতাফের বিরদ্ধে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ তিনি নিজেও শুনেছেন এবং তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। একই সাথে তিনি বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে জরুরী ভিত্তিতে সার্টিফিকেট সহকারী আফতাফের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এদিকে, এসি(ল্যান্ড) রওনক জাহান নিজের সিল-স্বাক্ষর ব্যবহার করে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করার এক মাসাধিক কাল অতিক্রম হলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। বরং গত ১৮ সেপ্টেম্বর/২০১৭ বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান এসি(ল্যান্ড) রওনক জাহানের কাছে অভিযোগের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি রহস্য জনক কারণে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং তার কাছে মোবাইল করার তথ্যটি সার্টিফিকেট সহকারী আফতাফকে জানিয়ে দেন। পরে আফতাফ এর পিতা গাইবান্ধা শহরের প্রভাবশালী ও ডানপন্থি ওই রাজনৈতিক দলের জেলা কমিটির নেতা ওই দিন বিকাল পৌনে ৬ টার সময়ে মোবাইলের মাধ্যমে অভিযোগকারী সাংবাদিক মোনায়েমকে আর কেউ যাতে এসি ল্যান্ডের কাছে মোবাইল না করে সেজন্য শাসনের সুরে নিশেধ করেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার সত্বে এসি ল্যান্ড অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তারা (তহশিলদার) জানান, অফিসে জমির নামজারীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা থাকা সত্বেও একজন সার্টিফিকেট সহকারীকে দিয়ে কানুনগো বা অফিস সহকারীর দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি আমাদের কাছে বোধগম্য হচ্ছে না। তারা অভিযোগের সুরে বলেন- আফতাফের কাছে সিনিয়র-জুনিয়র বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোন বাধ বিচার নেই, সবার সাথেই কমবেশী মুখের ভাষাসহ আচরণে অফিসের প্রায় সবাই ক্ষুদ্ধ। কিন্তু তার পিতা শহরের প্রভাবশালী ডানপন্থি একটি রাজনৈতিক দলের জেলা কমিটির নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাই এলাকার সচেতন মহল- আফতাবের দূর্নীতি হাতে নাতে ধরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যাচাই করার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
মোনায়েম মন্ডল