এম এস জিলানী আখনজী, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকে ঃ বিয়ে না করার মনস্থির করেছিলেন বড় ভাই। চিরকুমার হয়ে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনরা অনেক চেষ্টা করেও বিয়ে করাতে পারছিলেন না তাকে। অবশেষে ছোট ভাইয়ের কৌশলের কাছে হার বড় ভাইকে বিয়ে করতে হয়েছে। তা-ও ছোট ভাইয়ের সাথে যে কনের বিয়ে ঠিক করে দিন তারিখ ধার্য করা হয়েছিল সেই কনের সাথেই বড় ভাইয়ের বিয়ে হল। গত মঙ্গলবার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এঘটনাটি গাজীপুর ইউনিয়নের টেকেরঘাট গ্রামে ঘটেছে। বড় ভাই বলে যাকে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি হলেন, ওই গ্রামেমের ফুল মিয়ার পুত্র উজ্জল মিয়া। ছোট ভাইয়ের নাম জাকির মিয়া। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উজ্জল মিয়াকে বিয়ে করানোর চেষ্টা করে সবাই ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত মা-বাবাসহ সবাই সিদ্ধান্ত নেন জাকির মিয়াকেই বিয়ে করাবেন। কিন্তু বড় ভাইকে রেখে কোন অবস্থাতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজি ছিল না জাকির হোসেন। যেভাবেই হোক মা-বাবার ইচ্ছা তাদের সংসারে বউ আসুক, নাতিপতিতে সংসার ভরে উঠুক। আর তাই ছোট ছেলে জাকির মিয়াকেই বিয়ে করানোর সিদ্ধান্ত নেন। জাকির মিয়ার বিয়ে ঠিক করা হল উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের শুকদেবপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের কন্যা বিলকিসের সাথে। বিয়ের দিন তারিখ ধার্য ছিল ১৪নভেম্বর মঙ্গলবার। এরই মধ্যে আগের রাতে বর জাকির মিয়া বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। এ অবস্থায় মুরুব্বীদের মাথায় বাজ পড়লো। এলাকার মান বাঁচাতে সবাই বসলেন বৈঠকে। শেষতক উপায়ান্তর না পেয়ে বড় ভাই উজ্জলকেই বর সাজিয়ে নিয়ে আসা হল কনের বাড়ী। বদলী বর দেখে কনের পিতাসহ এলাকার মানুষের কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। কথাটি চাউড় হয়ে গেলে বদলী বর দেখতে কনের বাড়ীতে ভীড় জমান উৎসুক জনতা। এ বরের সাথে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না-এক প্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন কনের বাবা আব্দুল মালেক। খবর পেয়ে বিয়ে বাড়ীতে উপস্থিত হলেন গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খাঁন ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবেদ হাসনাত চৌধুরী সনজুসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এদিকে বরযাত্রীসহ বিয়েতে আসা লোকজন পেটের জ্বালায় চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেছে। দীর্ঘ আলোচনার পর রাত প্রায় ৮টায় বদলী বর উজ্জলের সাথেই বিলকিছের বিয়ে সম্পন্ন হয়। রাতে কনেকে নিয়ে বাড়ি আসার পর উধাও হয়ে যাওয়া সেই জাকির বাড়িতে এসে ভাবীকে বরণ করে নেয়। গ্রামবাসী বলাবলি করছেন-ছোট ভাইয়ের কৌশলের কাছে হেরে গেলেন বড় ভাই।