অপরাধ বিচিত্রা প্রতিবেদক
‘আগের রাতে নাসিম চড় মেরেছিল। রাতভর ঘুমাতে পারিনি। এরপর সিদ্ধান্ত নিই ওকে শিক্ষা দেওয়ার। সকাল থেকেই ওর বাসার সামনে অপেক্ষা করছিলাম। রাস্তায় পেয়েই ওকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলি।’রাজধানীর পূর্ব বাড্ডায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম আহমেদ হত্যা মামলার আসামি আসিফ সিকদার এভাবেই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে কুমিল্লায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে আসিফকে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে এর বিবরণ দেয় আসিফ।গত ৬ নভেম্বর সকালে পূর্ব বাড্ডার পোস্ট অফিস গলিতে নাসিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নাসিমের বাবা বাড্ডা থানায় আসিফ সিকদার, রমজান ও আবদুর রশিদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।নিহতের স্বজনদের অভিযোগ— তিন আসামিসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও কয়েকজন ৫ নভেম্বর রাতে পোস্ট অফিস গলির একটি ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকানে বিপিএলের ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়া খেলছিল। নাসিম তাদের বাধা দিলে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এর জেরে আসিফসহ অন্যরা নাসিমকে খুন করে।তবে আসামি আসিফকে গ্রেফতারের পর বুধবার বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী সমকালকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে এখন পর্যন্ত বিপিএল জুয়ার সংশ্নিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসিফ দাবি করেছে, ওই রাতে সে পোস্ট অফিস গলির একটি দোকানে বসেছিল। সেখানে নাসিমের সঙ্গে রমজানের ঝামেলা হয়। এক পর্যায়ে নাসিম তাকে চড় মারে। এর প্রতিশোধ নিতেই তাকে খুন করে আসিফ।ওসি জানান, বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসিফকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। খুনের নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি-না তা জানার চেষ্টা চলছে।পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মোশতাক আহমেদ বুধবার তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘটনার দিন সকালে নাসিমকে ছুরিকাঘাত করে আসিফ গুলশানের গুদারাঘাট এলাকায় চলে যায়। এর আগে বাড্ডার এক বাড়ির পাশে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ফেলে রাখে। সেখান থেকে মোবাইল ফোনে তার বাবাকে ঘটনার কথা জানায়। বাবার কাছ থেকে সে জানতে পারে নাসিম মারা গেছে। এরপরই সে কুমিল্লায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে। তাকে গ্রেফতারের পর বাড্ডা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।