নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরীকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল। গতকাল দুপুর ১টা ২১মিনিটে বাবুল তার মোবাইল ০১৭১৩ ০৮ ৩৪ ৫১ নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে তাকে লোক পাঠিয়ে উঠিয়ে নেয়ার হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী পল্টন থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নম্বর-৪৪ তারিখ পহেলা নভেম্বর। এম জি কিবরিয়া চৌধুরী সাধারণ ডায়েরীতে উল্লেখ করেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান বাবুল উপরে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে আমার পরিচয় জানতে চান।
তিনি পরিচয় পাওয়ার পর আমাকে অসভ্য ও অশালীন ভাষায় গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমাকে তুলে নিয়ে যাবেন, যেখানেই থাকি। আমাকে তুলে নেয়ার জন্য লোক পাঠাচ্ছেন। আমার হাড় গুড় ভেঙ্গে হত্যা করা হবে। তিনি আমাকে আরো বলেন, এদেশে যমুনা গ্রুপের বিরুদ্ধে কলম ধরার কেউ নেই। তোর এত সাহস। কোথায় থাকবি। এ পরিস্থিতিতে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকায় যমুনা গ্রুপের কাছে এনবিআর ২৪০ কোটি টাকা পাবে’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়।
দেশব্যাপী বাবুলের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড়
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল কর্তৃক মোবাইল ফোনে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরীকে হত্যার হুমকির ঘটনায় দেশবরেণ্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ ও র্তীব নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্র ও সরকার যমুনা গ্রুপের বাবুলের বিরুদ্ধে এই ধরণের ফৌজদারী অপরাধের ঘটনায় চুপ থাকতে পারে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, কিবরিয়া চৌধুরীর মতো সৎ, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল সম্পাদককে এই ভাবে হুমকি দিয়ে আইনের গতিকে স্তব্ধ করা যাবে না। তারা বলেন, নিশ্চয় সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে প্রমাণ করবেন আইন সকলের জন্য সমান।
এদিকে এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং প্রধান এহসানুল করিম, ডিএমপি কমিশনার অফিস, আইজি অফিস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ বিএসপি অফিস থেকে বলা বলেছে, এই হুমকি সংবিধানের ওপর আঘাতের সামিল। প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী ডিএমপির পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। যার নং ৪৪, তারিখ পহেলা নভেম্বর ২০১৭।
জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদককে হত্যার হুমকি দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ড. এম. ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি জাতীয় অর্থনীতিকে বলেন, এই ধরণের হুমকি কোন সভ্য মানুষ দিতে পারে না। কিবরিয়া চৌধুরী এই দেশের একজন সনামধন্য সাংবাদিক ও সম্পাদক। তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করার হুমকিতে যমুনার মালিক জাতির সামনে কি বোঝাতে চেয়েছেন। এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আশা করছি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য ও ১৯৭৫ উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাহলুল মজনুন চুন্নু যুমনা গ্রুপের চেয়ারম্যান কর্তৃক কিবরিয়া চৌধুরীকে হত্যার হুমকিতে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ওমর ফারুক বেশ দৃঢ়তার সাথে বলেন, সাংবাদিক কিবরিয়া চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যাবার সাহস কার আছে। ঘটনা শুনে বিস্মিত হয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী সংক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী এই ঘটনায় র্তীব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা কিবরিয়া চৌধুরীর পল্টন থানার ডাইরীর কপি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্যগণ যমুনা গ্রুপের বাবুল কর্তৃক সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরীকে হত্যার হুমকিতে দু:খ প্রকাশ করেছেন। সিনিয়র সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন খোরশেদ আলম, মহসিনুল করিম, আইয়ুব আনসারী, লায়কুজ্জামন, এস এম হানিফ, জহিরুল ইমলাম, মাহমুদুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
বিএসপির নিন্দা ও প্রতিবাদ
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ বিএসপি। বিএসপির আহবায়ক ও দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী যিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত নেতা। বিএসপির নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ঘটনায় স্বাধীন মত প্রকাশ, সম্পাদকীয় নীতি, সংবাদপত্রে রাষ্ট্রিয় নীতি ও সাংবিধানিক বিধি বিধানের ওপর হুমকি স্বরূপ। তারা বলেন, একজন সম্পাদকে তুলে নিয়ে যাওয়া, হত্যা করার হুমকি প্রদানকারী ব্যক্তি সরাসরি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের ওপর আঘাত হেনেছেন। নেতৃবৃন্দ গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরীকে রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা বিধানসহ যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান।
বিএসপির কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মঞ্জুরুল বারি মঞ্জু, মোঃ শাহজালাল, রফিকুল্যা শিকদার, বক্সসি ইকবাল, নেজাম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন, শাহজান আলী, এমরান হোসেন, অভি চৌধুরী, জসিম উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা কামাল, মামুনুর রশিদ, মোর্শেদ আলম, মোস্তফা হোসেন, হবিগঞ্জের দৈনিক খোয়াই সম্পাদক শামীম আহসান, মৌলভীবাজারের দৈনিক বাংলার দিন সম্পাদক ইকবাল, দৈনিক কাজীর বাজার সম্পাদক, পটুয়ালীর দৈনিক রূপান্তর সম্পাদক এনায়েত হোসেন, ঝালকাঠীর দৈনিক সত্য কণ্ঠের সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশালের দৈনিক পরিবর্তন সম্পাদক মিরাজ মাহমুদ, চাপাইনবাবগঞ্জের দৈনিক চাপাইদৃষ্টি সম্পাদক ইমরান ফারুক মাসুম, নোয়াখালী প্রতিদিন এর সম্পাদক রফিকুল আনোয়ার, দৈনিক নোয়াখালীর সময় সম্পাদক নাছির উদ্দিন বাদল, কুমিল্লার দৈনিক শিরোনাম সম্পাদক নীতিশ শাহা, খাগড়াচড়ির দৈনিক অরন্য বার্তার সম্পাদক আতাউর রহমান চৌধুরী, ময়মনসিংহের আজকের খবর এর সম্পাদক মোশারফ হোসেন, নরসিংদী দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ সম্পাদক কাজী আনোয়ার কামাল, নারায়ণগঞ্জে এর দৈনিক দেশের আলো সম্পাদক আনিসুল হক সানি, গাজীপুর এর দৈনিক আজকের জনতার সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ সোহরাব উদ্দিন বাবুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
এছাড়া জেলা ও উপজেলা সাংবাদিক এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ কিবরিয়া চৌধুরীকে হত্যার হুমকিতে র্তীব প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানিয়েছে। জেলা সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জের সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম, সাভারের মেহেদী হাসান, গাজীপুরের জহুরুল ইসলাম, টঙ্গীর আব্দুল মোতালেব, নরসিংদীর আয়ুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের মোরসালিন, ময়মনসিংহের মিয়া সোলতান, উপজেলার জুয়েল আহমেদ, নেত্রকোনার আমিন উদ্দিন, টাঙ্গাইলের জহুরুল হক। চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালীর রুনু হাসান, গোলাম মোস্তফা বুলবুল, আব্দুস সালাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আবুল কালাম আজদ, আব্দুল হান্নান, মোস্তাফিজুর রহমান। চট্টগ্রামের মাখন লাল সরকার, ইব্রাহিম বিন তাহের, জুয়েল আহমেদ, হাফেজ আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন, বেলাল উদ্দিন, বদিউল আলম, ইকবাল হাসান, জসিম উদ্দিন ও হারুন চৌধুরী। লক্ষীপুর জেলার মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান মাষ্টার, রফিকুল ইসলাম। ফেনীর জেলার সাংবাদিক আব্দুল বাতেন, মোরশেদ আলম, সাবউদ্দিন। কুমিল্লা জেলার সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ, আব্দুল কাদের, আইয়ুব আলী, অধ্যাপক ইউনুস, আলী হোসেন। হবিগঞ্জের সাংবাদিক শাহ মামুনুর রহমান, নূর ইসলাম, চুন্ন মিয়া। সিলেটের সাংবাদিক লেয়াকত আলী খান, আশ্রাফুল ইসলাম চৌধুরী, শাজ্জাদুর রহমান, দানিয়া আলীদ, আবুল হোসেন। মোলভীবাজারের সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান রাহেল, আব্দুল মতিন, নরুল ইসলাম সেফুল, আবুল কালাম জিলা, রাধাপদ দেব সজ্বল, সৈয়দ মহসীন, এমদাদুর রহমান, সোলতানুল কবির।
চট্টগ্রামের রজিবদাস, হবিগঞ্জের সাগর মিয়া, নড়াইলের হাবিবুর রহমান, খুলনার হাবিবুর রহমান হবি, কবীর মুন্সি, বায়জেদ আলী। ঢাকার জাহেদুল ইসলাম, বরিশালের লুৎফর রহমান, যশোরের আলী হোসেন বাচ্চু, মোঃ নয়ন হোসেন, সিরাজগঞ্জের ইকবাল হোসেন সরকার, বরিশালের শামসরু রহমান, গাইবান্ধার লিটন মিয়া লাকু, শামসুর রহমান, মাসুদ রানা, যশোরের ছায়দুল ইসলাম, লালমনিহাটের নুরুজ্জামান, রাজশাহীর আক্তার হোসেন, নড়াইলের সুমা মুখার্জী, মকলেছুর রহমান বাবলু, দিনাজপুরের শামসুল আমল, ইব্রাহিম খলিল শোহাগ, আমিনুল ইসলাম, রজব আলী, আনিছুর রহমান, আক্তার হোসেন মুকুল, জামাল উদ্দিন, তাজুল ইসলাম, একরামুল হক। রংপুর জেলার আব্দুল মতিন, নীতিশ শাহা, রেজাউল করিম, শামসুল ইসলাম সিমু, রাজশাহীর মোঃ সুমন মিয়া, মেহেদী হাসান, নোয়াখালীর আব্দুর বাসেদ, ময়মনসিংহের মঈন উদ্দিন, গাজীপুরের আব্দুল কাদের, কাজীম উদ্দিন, সিরাজুল ইসলাম। হবিগঞ্জের শফিউর রহমান। নরসিংদীর সফিকুল ইসলাম। নাটরের মঞ্জুরুল মাওলা। রাজশাহীর সৈয়দ বেলাল। মাদারিপুরের শামসুল হক ও সামিউর রহমান এবং চাঁদপুরের হাবিবুর রহমান।