অপরাধ বিচিত্রা :ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় ইউএনও ও পিআইও’র মধ্যে দ্বন্দ্বে এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত রিলিফের চাল আত্মসাতের ঘটনায় ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জেলা-উপজেলার সচেতন মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রায় ৬মাস পূর্বে এঘটনার বিষয়টি ঝালকাঠির জেলা প্রশাসন অবগত থাকলেও তাদের পক্ষ থেকে এখোন পর্যন্ত দৃশ্যত নীরব ভূমিকা পালন করা হছে বলে অভিযোগ উঠেছে।কাঠালিয়ার ৫টি এতিমখানার জন্য বরাদ্দকৃত ৫ মে.টন রিলিফের চাল লোপাটের ঘটনায় ইউএনও ডা.শরীফ মোহাম্মদ ফায়জুল আলম ও পিআইও’র মিজানুর রহমান একে অন্যকে দোষারোপ করা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিদের রিলিফ নিয়ে দূর্নীতিতে লিপ্ত হতে দেখা গেলেও উপজেলার শীর্ষ দুই কর্মকর্তার একই ঘটনায় লিপ্ত হওয়া ও ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের ঘটনা কাঠালিয়ার টক-অব-দ্যা উপজেলায় পরিনত হয়েছে।পিআইও কার্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে চলতি বছর কাঠালিয়া উপজেলার ৫টি এতিমখানার পক্ষ থেকে সাহায্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ডা.শরীফ মোহাম্মদ ফায়জুল আলমের কাছে আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা সমাজসেবা অফিস সহকারি মো. রফিক স্বাক্ষরিত পত্রে আবেদনকারী ৫টি এতিমখানাকে ১ মে. টন করে রিলিফের চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে বলে জানায়। একই চিঠিতে উক্ত এতিমখানা কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রতিনিধি প্রেরন করে জরুরী ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত চাউল নেয়ার জন্য তাগিদ দেন। আর এ চিঠি পেয়ে বরাদ্দকৃত চাউল উত্তোলন করতে গিয়ে এতিমখানা কর্তৃপক্ষ নানারকম নাটকীয়তা ও হয়রানি শিকার হয় বলে সরেজমিন খোজ নিয়ে জানা যায়।বরাদ্ধের চিঠি প্রাপ্ত ৫ এতিমখানায় খোজ নিলে কর্তৃপক্ষ জানায়, কাঠালিয়া উপজেলার পূর্ব ছিটকি দারুল সুন্নাত এতিমখানা, ছোনাউটা আকবর মুসলিম এতিমখানা, খানকায়ে আশরাফিয়া এতিমখানা, উত্তর চড়াইল চানবরুনেছা এতিমখানা ও জয়খালি শামীম মঞ্জিল সাহিনা এতিমখানাসহ ৫টি এতিমখানাকে ১ মে.টন করে মোট ৫ মে. টন চাউল বরাদ্দের বিষয়টি জানানো হয়।সে অনুযায়ী তারা এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত রিলিয়ের চাউল নিতে পর্যায় ক্রমে উপজেলা সমাজসেবা, পিআইও , ইউএনও ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এডিসি কার্যালয়ে চক্কর কাটলেও চাউলের হদিস পাওয়া যায়নি।এমন কি বিগত ৬ মাস ধরে উল্লেখিত কর্মকর্তাসহ ইউনিয়ন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে দেনদরবার করলেও এতিম শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত রিলিফের চাউলের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে পূর্ব ছিটকি দারুল সুন্নাত এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাও. নুরুল ইসলাম আকন বলেন, ইউএনও’র স্বাক্ষরিত একই চিঠিতে ৫টি এতিম খানার বরাদ্ধকৃত চাউল আনতে গেলে পিআইও বলছে ‘ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করুন, আবার ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি পিআইও’র সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
এক পর্যায়ে পিআইও বলেন, ইউএনও তোমাদের চাল বিক্রি করে খেয়েছে। এ নিয়ে নিবার্হী কর্মকর্তা আমাদের এতিমখানার চাল নিয়ে ঝালকাঠির এডিসি দোলোয়ার হোসেন মাতুব্বরের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।এ ব্যাপারে কাঠাঁলিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ডা: শরীফ মোহাম্মদ ফাইজুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এতিমখানার উক্ত চালের বিষয়টি পিআইও ভালো জানেন।অন্যদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গরীবের চাল স্যার (নিবার্হী কর্মকর্তা) বিক্রি করেছেন আমি কিভাবে দেবো।