উত্তর কোরিয়া সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর দেশটির সঙ্গে বিশ্বের সব দেশকে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বক্তব্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে পিয়ংইয়ংয়ে তেল সরবরাহ বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা জানি, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচির মূল চালিকাশক্তি তেল। আর সেই তেলের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা হচ্ছে চীন।”
চীন উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র দেশ এবং সবচেয়ে গুরুত্বর্পর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হওয়ায় তাদের এ ব্যাপারে আরও বেশিকিছু করা প্রয়োজন বলে হ্যালি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত চায় না। কিন্তু যুদ্ধ বাধলে উত্তর কোরিয়া পুরোপুরি ধ্বংস হবে।
উত্তর কোরিয়া দুমাসের মাথায় তাদের সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনও জায়গায়ই আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যালি বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার কর্মকান্ড বিশ্বকে ‘যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’ নিয়ে গেছে। সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, এমন ‘আগ্রাসী কর্মকান্ড চলতে থাকলে’ এতে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতাই কেবল বাড়বে।
তিনি বলেন, “গতকাল উত্তর কোরিয়ার শাসকরা একটি পথ বেছে নিয়েছে। আর তা হচ্ছে পারমাণবিক আগ্রাসনের পথ, সভ্য দুনিয়াকে বুড়ো আঙুল দেখানোর পথ। তাদের বেপরোয়া আচরণের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ বিশ্বের ধৈর্য্যকে তারা চ্যালেঞ্জ করার পথ বেছে নিয়েছে।”
উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বহুমুখী অবরোধ আরোপ করার পরও তারা নতুন করে আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে গেছে উল্লেখ করে হ্যালি বলেন, দেশটি এর মধ্য দিয়ে আরও ব্যবহার উপযোগী পারাণবিক অস্ত্রাগার গড়ে তোলার পথে এগিয়েছে।
ফলে বিশ্বের দেশগুলোকে এখন নিজেদের ক্ষমতাবলেই উত্তর কোরিয়াকে আরও বিচ্ছিন্ন ও দুর্বল করাসহ বিপজ্জনক পথ থেকে তাদের সরিয়ে আনতে হবে বলে হ্যালি উল্লেখ করেন এবং সব দেশকেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্কছেদের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “উত্তর কোরিয়ার ওপর সব জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি বিশ্বের সব দেশেরই উচিত দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। তাছাড়া, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতাও কমিয়ে দেওয়া উচিত।”
হ্যালি আরও বলেন, “বিশ্বের সব দেশকেই উত্তর কোরিয়া থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে এবং সব দেশ থেকে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদেরকে বহিষ্কার করতে হবে।”