ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তোলপাড় চলছে। অভিযোগ রয়েছে পরীক্ষার আগের দিন রাতে দুটি হলে প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। অভিযানে ছাত্রলীগের এক নেতা ও আরেকজন কর্মীকে আটক করা হয়। আটকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আরও ১৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে মর্মে তথ্য পওয়া গেছে। যেখানে পুলিশী অভিযানের সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ সহযোগিতা করেছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে অস্বীকার করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন আচরনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অভিবাকরা। ধন্যবাদ ভারপ্রাপ্ত উপচার্যকে। ধন্যবাদ প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এবং প্রতিবাদ নাকচ করে দিয়ে কতিপয় অসাধু ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরকে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেয়ার জন্য। সাধারন শিক্ষার্থীরা নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল ও প্রতিবাদ সভার অয়োজন করেন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করে ও নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে মিছিল বের করে। এদিকে দায় এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে ফল প্রকাশ ও ভর্তি প্রক্রিয়া চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। ৭১ হাজার ৫৯৮ জনের উত্তরপত্রের মূল্যায়ন এবং ফলাফল তৈরি করে প্রকাশের কাজটি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, প্রশ্নপত্র ছাপা হয় পরীক্ষার আগের রাতে। এরপর প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সহায়তায় তা পৌঁছে দেয়া হয়। যেহেতু আগের রাতেই অনেকের হাতে প্রশ্ন এসেছে তাই রাতেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সভায় বলেন তারা তিন মাস ধরে কোচিং করেছে। সারা দিন পড়ালেখা করেছে। অথচ যেসব পরীক্ষার্থী আগের রাতে টাকা দিয়ে প্রশ্ন পেল তারাই বেশি নস্বার পেয়েছে। এতে করে মেধাবি ছাত্র-ছাত্রীরা তদের মেধার মূল্যায়ন ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। অভিভাবক সমম্বয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও যদি দায়িত্ব এড়িয়ে চলে ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের একটি প্রমাণিত ঘটনা অস্বীকার করে তাহলে সাধারন শিক্ষার্থীদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ঢাকা বিশ্ব¦বিদ্যালয়ে দুর্বৃত্তায়নের ছায়া নেমে এসেছে অনেক আগেই। শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদেরকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে মানব বন্ধনের সংবাদ দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় প্রমানিত হয়েছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপচার্য এবং তার প্রশাসন অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে লজ্যাবোধ করেন না।