বাংলাদেশটি বর্তমানে সকল প্রকার অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তবে এক ধরণের অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে। তা হলো ভূমিদস্যুতা। অপরের জমি ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্যায়ভাবে দখল করার নামই হচ্ছে ভূমিদস্যুতা। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ভূমিদস্যু নামক দূর্বত্তে ছেয়ে গেছে। এতিম ও বিধবাদের জমি কেড়ে নিয়ে রাস্তায় বের করে দেওয়ার মত অপরাধ করে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এত বড় অপরাধ করার সময় বিবেক ওদেরকে দংশন করে না। ওদের কারণে অসংখ্য মানুষ নিজের জমি ফেলে ঢাকা শহরে এসে দিনমজুরের কাজ করছে ও মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আবাসিক প্রকল্পের নামে চলছে কৃষিজমি দখল ও ভরাট। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে জলাশয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অসংখ্য আবাসিক প্রকল্প বিশালাকারের কৃষিজমি ও জলাশয় দখল করে আসছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জে গেলে দেখা যায় কৃষিজমির ওপর শত শত আবাসিক প্রকল্পের সাইনবোর্ড। নিকটস্ত নদী থেকে পাইপ দিয়ে চারদিক থেকে বালি ফেলে মাঝখানের জমির মালেককে আটকিয়ে বাধ্য করে তাদের প্রকল্পের কাছে জমি বিক্রি করতে। বাধ্য হয়ে ও প্রাণের ভয়ে অনেকে নামমাত্র দামে এসব ভূমিদস্যুদের কাছে জমি বিক্রি করে চোখের পানি ফেলছে। আবাসিক প্রকল্পগুলোর রয়েছে বিশেষ ক্যাডার বাহিনী।
এসব ক্যাডারদের সাথে আবার সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের রয়েছে সখ্যতা। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিদস্যুদের দ্বারা জমি দখলের সময় বাধা দিতে গিয়ে অনেক নিরীহ জমির মালিককে প্রাণ দিতে হয়েছে। প্রসাশনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ও মানববন্ধন করেও কৃষক তার জমি রাখতে পারছে না।
মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয় না। বরং থানা ভূমিদস্যুদের পক্ষ অবলম্বন করে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়। ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, মেম্বাররা পর্যন্ত অসহায় জমির মালিকদের দূর্দশা দেখছে না।
কারণ ভূমিদস্যু ও আবাসিক প্রকল্পগুলো মোটা অংকের টাকা দিয়ে সবাইকে হাত করে রাখছে। ভূমিদস্যু ও আবাসিক প্রকল্পগুলোর কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিদিনই বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি আবাসনে ও অনুৎপাদনশীল ক্ষেত্রে চলে যাচ্ছে। হইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও মুন্সিগঞ্জের আড়িয়াল বিল ওদের হাত থেকে রক্ষা পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে।