বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কিছুদিন পর পরই নির্মম হামলা হচ্ছে। হামলাকারীরা বরাবরই অধরা থেকে যাচ্ছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে হামলা ও লুটের সাথে কারা জড়িত। অথচ সরকার দলীয় লোক বলে ওরা হামলা ও লুটের মতো অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। ১১ নভেম্বর, ২০১৭ খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার উত্তর বানীশান্তা গ্রামের হিন্দু মেধাবী কলেজ ছাত্রী জয়ী মন্ডল হত্যা এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দাকোপ বাজুয়া এস এন কলেজ এর ছাত্রলীগের সভাপতি ধর্ষক ইনজামামুল মির্জা এর গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলাতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোটের উদ্যোগে মিছিল ও মানব বন্ধন করা হয়। মিছিল ও মানব বন্ধনে সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুম ও লুটের তীব্র প্রতিবাদ জানান হয়। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানব বন্ধনের সময় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট এর সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে বলেন কলেজ ছাত্রী জয়ী মন্ডল হত্যার মূল আসামী দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আবুল হোসেনের ইন্ধনে নির্যাতিত পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও দেশ ছেড়ে যাবার জন্য চাপ দিচ্ছে। সরকার দলীয় লোক বিধায় হত্যাকারী অধরা রয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন হিন্দু সম্প্রদায়। মানব বন্ধন থেকে বক্তারা আরও বলেন সারা দেশেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চলছে। ক্ষমতাসীন সরকার নিজেকে অসাম্প্রদায়িক সরকার বলে দাবি করছে। অথচ এ সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা ও তাদের বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট হয়েছে তা অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোন সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা ও লুটের মতো ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি হিন্দুদের জমি দখল করার জন্য সরকার দলীয় কিছু ভূমি দস্যু হিন্দু যুবকদের নামে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে ধর্ম অবমাননার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং প্রশাসন সঠিক তদন্ত না করে নিরীহ হিন্দু যুবকদের ৫৭ ধারায় গ্রেপ্তার করে নানাভাবে নির্যাতন করছে। স্বাধীন দেশে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠি ৭১’ এর মত অসহায় জীবন যাপন করছে। নিজ জন্মভূমিতে তারা আজ পরাধীন। বিগত দিনগুলোতে দিনাজপুর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল সহ সারা দেশে গণহারে হিন্দু নির্যাতনের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা জড়িত একথা নির্যাতিতরা প্রশাসন ও গণমাধ্যমকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে। অথচ সরকার তার দয়িত্ব এড়িয়ে যাবার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীদের ওপর দোষ চাপিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিয়েছে। সস্প্রতি খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলায় ঘটে যাওয়া হামলা ও লুটের ব্যাপারে সরকার একই দানবীয় কাজটি করেছে। এতে সমস্যা কমছে না বরং ক্রমশ বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে এর নিয়ন্ত্রন রাখা এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে যা একটি দেশ ও জাতীর জন্য মোটেই শুভ নয়।