”দুর্নীতি মুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমাদের স্বপ্ন”

0
899

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
”দুর্নীতি মুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমাদের কাম্য” – এই প্রতিপাদ্যকে বুকে ধারণ করে ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করেছিল ’’অপরাধ বিচিত্রা”, আজ তাঁর ২০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। নানা প্রতিবন্ধকতা, হরেক রকমের চক্রান্তের জাল পেরিয়ে, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় থেকেও ’’অপরাধ বিচিত্রা” সুনামের সাথে দুনীঁতি, অন্যায়, অবিচার, শোষণ, ভেজাল, ক্ষমতার অপব্যবহার -এর  বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে হলেও তাঁর প্রতিপাদ্য থেকে একচুল পরিমান পিছু হটেনি, বরং সকল ক্ষেত্রে দুনীঁতির বিরুদ্ধে সরকারের আবস্থানকে শক্তিশালী করে আসছে এবং ভবিষ্যতে তা অব্যহত থাকবে।
দুর্নীতির  বিরুদ্ধে কথা শুরুর আগে আসুন আমরা প্রথমেই নিজেদের সমালোচনা করি। সংবাদপত্র শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে কি দুর্নীতি করাল থাবা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারছেন ?  যদি না পারেন, তবে কোথায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে ? কিভাবে সমাধান সম্ভব ?
দেশে লক্ষের বেশী বেসরকারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কামিল মাদ্রাসা রয়েছে যেখানে মূল বেতনের ১০০ ভাগ সরকারী খাত থেকে প্রদান করা হয়, সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত স্বাবলম্বী হোক বা দরিদ্র হোক না কেন, তবে সাংবাদিক সমাজ যারা সরকারের আয়না তারা কেন সুবিধাবঞ্চিত থেকে যাবে ??  দুর্নীতি রোধে যারা তৃণমূল পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নির্ভয়ে, নির্বিঘেœ  ও জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাবেন, তাদেরকে অবহেলিত রেখে  আদৌও কি দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব??
দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করার জন্য দেশ যাদেরকে বেতন দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরাই তো শুধু অন্য ধান্ধায় ব্যস্ত থাকেন । তাদের  দুর্নীতির কথা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়কে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করব কার্যকরভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য খাত ওয়ারী গুরুত্ব বিবেচনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়, আয়কর বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও ভবন নির্মান সম্পর্কিত সকল বিভাগ -কে গুরুত্ব দিয়ে সুশীল সাংবাদিক সমাজকে অর্ন্তভুক্ত করে মোবাইল টিম গঠনের মাধ্যমে কালবিলম্ব না করে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করা হোক।
কেন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় ?
জনপ্রশাসন মন্ত্রালয়ের কর্মকর্তারা কি দেশের জন্য কাজগুলোকে গুরুত্ব দিবেন, না ব্যক্তিগত প্রচার, বিদেশ ভ্রমণ, ফেসবুক স্ট্যাটার্স, ক্ষমতার দার্¤ি¢কতা প্রদর্শন, অফিস চলাকালীন ব্যক্তিগত ফোন চারিতায় মশগুল থাকা, সরকারীভাবে জমি জমার প্লট আদায় ও বন্টন, বিদেশী ও আস্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে ডেপুটেশন নেওয়া এবং তাঁদের  সাথে সর্ম্পকোন্নয়ননের চেষ্টায় লাগলে এমওইউ ভঙ্গের ক্ষেত্রেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকবেন ??
ইতোপূর্বের  অঘটনসমুহের সারসংক্ষেপ
    কেউ এমওইউ ভঙ্গ হতে না দেওয়ায় শাস্তিমূলক বদলী হন,
    কেউবা এমওইউ ভঙ্গের ক্ষেত্রেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকার পুরস্কার সরূপ, নিজ জেলার কাছাকাছি থানায় পোষ্টিং পান,
    কেউবা নিজের ক্ষমতা জাহির করার জন্য সরকারী সংস্থাকে ব্যক্তিগত পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন,
    কেউবা চাকুরীর পাশাপাশি নামে-বেনামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন, দুইটাই ভালো চলছে।

Advertisement

কেন আয়কর বিভাগ ?
    শুধু ঢাকা শহরের মধ্যেই কোটিপতির সংখ্যা কয়েক লক্ষ। আপনি যদি শুধুমাত্র বনশ্রী আবাসিক এলাকা ঘুরে আসেন এবং এনবিআর এর মোট আয়কর দাতার সংখ্যার সঙ্গে টালি করে নেন তবে তার প্রমাণ পেতে বেগ পেতে হবে না।
    ঢাকা শহরে সাদা কাগজে ভাড়া আদায়কারী ও ঢাকা ওয়াসার পানি নিয়ে ব্যবসাকারীর সংখ্যা শত শত  ??
    শহরের অলি-গলিতে  এমনকি ফার্নিসারের দোকানদারও আয়কর দিতে সক্ষম।

কেন শিক্ষা মন্ত্রনালয় ?
    ভিন্ন-ভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা একই শ্রেণীতে পড়ছে কিভাবে ?
    ১ম শ্রেণীতে মোট আসনের বিপরীতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে মাত্র ১০-১৫ ভাগ।
    শ্রেণীতে ফলাফল ঘোষণার পর, কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পরবর্তী বছর ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে প্রায় ২০০-৪০০ জন —- কিভাবে ??

    টিকা কার্ড অনতিবিলম্বে অনলাইন করে, জন্মনিবন্ধনের সাথে লিংক করে  বয়স দুর্নীতি রোধ করা হোক, ছাত্র-ছাত্রীদের  মাঝে অসমপ্রতিযোগিতা বন্ধ করা হোক।
কেন ভবন নির্মান সম্পর্কিত সকল বিভাগ ?
    দিন দিন ঢাকা শহরের লোকসংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বেড়ে চলেছে ভ’-কম্পন, বাড়ছে অবৈধ ভবন, ডোবা-পুকুর ভরাট করে  ভবন তৈরীর মহাউৎসব ।
     ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড সমুহ ও পারিপাশির্^ক পরিবেশ আইন প্রায় সকল ক্ষেত্রেই লঙ্ঘিত হচ্ছে।
    আপনি যদি সরোজমিনে শুধুমাত্র বনশ্রী আবাসিক এলাকা ঘুরে আসেন তবে তার প্রমাণ পেতে বেগ পেতে হবে না।
অপরাধ বিচিত্রা কি থেমে আছে ??
না।
সরকারের তথ্য অধিকার আইন মেনে যেকোনো দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, শোষণ, নিপীড়ন এর সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাস থেকে নিয়মিত সংবাদের  অতিরিক্ত হিসাবে ”বিচিত্রা কচড়া” শিরোনামে প্রতি সংখ্যায় তা প্রকাশিত হচ্ছে যেন সংশ্লিষ্ট সংস্থা চাইলে দেশের প্রয়োজনে আমাদের তথ্য সহযোগিতা নিয়ে দুর্নীতি রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনে সক্ষম হন।
পরিশেষে,
সরকারী মস্ত্র্রনালয়, বিভাগ ও দপ্তর সমুহের সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ২৪ ঘন্টা হটলাইন নাম্বার চালু করে  তা অব্যাহত রাখার সুব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যেখান থেকে আপামর জনগন নির্বিঘেœ সেবা নিতে পারেন ।
অপরাধ বিচিত্রার আগামী কর্মপরিকল্পনা
আগামীতে অপরাধ বিচিত্রা ভেজাল প্রতিরোধ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করতে যাচ্ছে,  যেখান থেকে সরকার তাঁর প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে পারবেন।

Advertisement

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here