রাজধানীর পল্লবীতে গৃহবধু সায়েরা খাতুন আলোকে হত্যার দায়ে তার দেবর রাব্বি হোসেন মনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান রোববার আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রাব্বী পল্লবীর ‘নন লোকাল রিলিফ ক্যাম্পের’ ইসমাইল হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার আগে বিচারক
পর্যবেক্ষণে বলেন, সমাজে অহরহ খুনের ঘটনা ঘটছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ ধরনের মামলার আসামির উপযুক্ত বিচার হওয়া আবশ্যক। আসামি যে অপরাধ করেছে তা খুবই মর্মান্তিক, বিভীষিকাময় এবং ভয়ঙ্কর। এই অপরাধ সভ্য সমাজের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন মো. আবদুল কাদের পাটোয়ারী এবং আসামিপক্ষে ছিলেন মো. আমিন উদ্দিন। মামলার বিবরণে জানা যায়, সায়েরা খাতুন আলো তার স্বামী সোহেলকে নিয়ে পল্লবীর একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আলো সেলাইয়ের কাজ করতেন। তার দেবর রাব্বি ওই বাসতেই থাকতেন। রাব্বির কোনো আয় রোজগার ছিল না। এ নিয়ে ভাবীর সঙ্গে প্রায়ই তার ঝগড়া হতো। আলো তার বন্ধক রাখা একটি স্বর্ণের চেইন ফেরত আনার জন্য ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হন। নিরাপত্তার কথা ভেবে রাব্বিকেও সঙ্গে নেন তিনি। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে পল্লবীর সেকশন ১১-তে আব্বাস উদ্দিন স্কুলের ঢালে আলোর লাশ পাওয়া যায়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। এ ঘটনায় আলোর ভাই মো. শাহজালাল মামলা করলে রাব্বিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাব্বি পরে ভাবীকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পল্লবী থানার এসআই আবদুল বাতেন ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন। ওই বছর ১৫ জুলাই অভিযোগ গঠন করে রাব্বির বিচার শুরু করেন আদালত। মোট সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে বিচারক রোববার মামলার রায় ঘোষণা করেন।