কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটকের জেরে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে চার পুলিশ সদস্যকে পেটানোর ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি। হামলার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয় হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে অভিযোগটি গ্রহণ করছে না থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। আহত পুলিশ সদস্যরা জানান, গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার খোদাইভিটা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও ডিবি পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার কাদের বাহিনীর অন্যতম সদস্য মো. শহিদকে ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ।
আটকের জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ ৪ সদস্যকে পিটিয়ে ও ইট-পাটকেল মেরে আহত করা হয়। আহত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগ, উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো.কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় আহত হন মনোহরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুন মিয়া, পুলিশ সদস্য আনিস ও নায়েব আলী আহত হয়। হামলায় আহত পুলিশ সদস্য মনোহরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা জানান, আমি বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করি থানায়। কিন্তু আজ চারদিন অতিক্রম হলেও রাজনৈতিক তদবীর ও বিভিন্ন রহস্যজনক কারণে লিখিত অভিযোগটিকে মামলা বা এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করছে না থানার ওসি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা দুইজকে আটক করেছি। তিনি বলেন, থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি। আসামি গ্রেফতারের পর মামলা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকেলে মনোহরগঞ্জ বাজারের খোদাইভিটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯পিস ইয়াবাসহ উপজেলার দিশাবন্দ গ্রামের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাত দলের সদস্য মো.শহিদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে রাজনৈতিক তদবির চালিয়ে ওসি’র কাছ থেকে তাকে (ইয়াবা ব্যবসায়ীকে) ছাড়িয়ে নেন উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো.কামাল হোসেন। এরপর ওইদিন রাত ৭টার পর খোদাইভিটা এলাকায় অভিযানকালে রেখে আসা পুলিশের মোটরসাইকেল আনতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা কামালের নেতৃত্বে একদল মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে উদ্ধার করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।