ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আর প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি সম্রাজ্ঞী হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে মহিলা দলের এক কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তর (কাফরুল ও ক্যান্টনমেন্ট থানা) এই কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পরিণতির পরেই আজকে সব পার্লামেন্ট ক্ষমতাশালী বাদশাহীতে পরিণত হয়েছে। রানীতে পরিণত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত থেকে আওয়ামী লীগের দুইজন মন্ত্রী সাজাপ্রাপ্ত। এর পরও তারা মন্ত্রিত্ব করছেন। প্রধান বিচারপতি সাধারণ মানুষের আশা-ভরসার স্থল তথা সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান হিসেবে মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ঘোষণা করলেন। তিনি রায় দিলেন। প্রত্যেকটি মানুষ, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল প্রধান বিচারপতির এই রায়কে অভিনন্দিত করেছিলেন।’ বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গোটা পার্লামেন্ট এখন শেখ হাসিনার অধীনস্থ। গোটা পার্লামেন্টই হচ্ছে শেখ হাসিনার চাকর-বাকর। বিচারপতিদের অপসারণ ও নিয়োগ যদি পার্লামেন্ট থেকে হয় তাহলে তার (শেখ হাসিনার) ইচ্ছার বাইরে, তার সিদ্ধান্তের বাইরে কি বিচারপতি নিয়োগ হবে?’ রিজভী বলেন, ‘ভয়ংকর অন্ধকারের তমশার মধ্যে আমরা পড়ে আছি। এমন একটি দেশ আমাদের, এখানে যারা সত্য কথা বলে, ন্যায়ের কথা বলে, যারা আইনের কথা বলে, তারা কারাগারে যায়।’
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা নিজ নিজ এলাকায় অনুষ্ঠান করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি একটি থানার সর্বোচ্চ ব্যক্তি। গত দুদিন আগে তার উপস্থিতিতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরাও বক্তব্য রেখেছেন। গুণগান করছেন। আজকে যারা সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারা মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন। আর যারা ন্যায়ের কথা বলে। যারা বাক-স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলে, তাদের নামে মামলা হয়, তাদের বসবাস হয় লৌহ কপাটের মধ্যে। আর গুণ্ডা-পাণ্ডা, সন্ত্রাসীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পুলিশ অফিসারের সঙ্গে একই মঞ্চে বক্তব্য রাখে।’ রিজভী বলেন, ‘তিনি পার্লামেন্টেরও প্রধান, আদালতেরও প্রধান, নির্বাহী বিভাগেরও প্রধান। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী নন। এখন তিনি সম্রাজ্ঞী। তিনি বাদশা। তার কথা শুনতে হবে। তার কথা স্পিকারকে শুনতে হবে। তার কথা আদালতের সবাইকে শুনতে হবে। না শুনলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার মতো পরিণতি হবে।’ ঢাকা মহানগর (উত্তর) মহিলা দলের সভাপতি পেয়ারা মোস্তফার সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।