নোমান মাহমুদঃ দেশের সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টায় বারংবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দুই পাশের পথচারী চলাচলের রাস্তাকে দখলমুক্ত করা হলেও উচ্ছেদের কিছুদিন পরই ফের অবৈধ দখলদারদের হাতে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায় এই এলাকার
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ফুটপাতগুলো। স্থায়ীভাবে ফুটপাতকে দখরমুক্ত করতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা পুলিশসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত কিছুদিন পূর্বেও হেমায়েতপুর, সাভার, নবিনগর সহ ঢাকা-আরিচা মহসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ফুটপাতগুলোকে দখলমুক্ত করা হলেও গতকাল ঐসব এলাকার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে দেখা যায় মহাসড়কের পাশে পথচারী চলাচলের রাস্তাগুলো ফের পূর্বাবস্থায় ফিরে গেছে। বিশেষ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার ও নবিনগর এলাকার দুই পাশের ফুটপাত পরিদর্শনে দেখা যায় অবৈধ দখলদারদের চাপে সেখানে পথ চলাতো দুরে থাক পা রাখাও মুশকিল। যার কারনে সাধারন পথচারীদের বাধ্য হয়েই সড়কে নামতে হচ্ছে । আর এতে করে বিভিন্ন সময় ছোট-খাটো দূর্ঘটনাসহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে প্রানঘাতী দূর্ঘটনার আশংকা। অন্যদিকে শুধু ফুটপাতই নয়, সাভারের দু’টো ফুটওভার ব্রিজও অবৈধ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে। এবিষয়ে সাভার বাজার বাস স্টান্ড এলাকায় পথ চলতে গিয়ে দূর্ভোগের স্বীকার হওয়া ফরজানা আক্তার নামের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ৩য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ”বাস থেকে নেমে ওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হবো, দোকানের চাপে ব্রিজে উঠতেই বেগ পেতে হচ্ছে। ব্রিজের উপড়েও দোকান বসিয়ে ভিড় করে রাখা হয়েছে। কোনমতে ওভার ব্রিজ থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হাটার চেষ্টা করছি, সেখানেও বিপত্তি ! ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে ফুটপাতে জায়গাতো নেই তার উপর দোকানদারদের একটু সড়ে দাড়াতে বললে আড়চোখে তাকাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন ফুটপাতে হাটার চেষ্টা করা বড় কোন অপরাধ!” অন্যদিকে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, দফায় দফায় পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে স্থায়ীভাবে ফুটপাতকে দখলমুক্ত করতে ব্যার্থ হলেও কোন জাতীয় দিবস কিংবা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে কোন বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ বা ভিভিআইপি চলাচলের আগ মূহুর্তে ফুটপাতগুলো সম্পূর্ন দখলমুক্ত হয়ে যায়। তখন আর দেখে উপায় থাকে কিছুটা সময় আগেও এই ফুটপাত ছিল জনসাধারনের দূর্ভোগের তীর্থস্থান। আবার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ও রাজনৈতিক কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তির ছত্রছায়ায় অবৈধ এই দখলদাররা তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে। এই প্রসঙ্গে কয়েকজন ফুটপাত ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলে, সুলতান ও রফিক নামের দুই ব্যবসায়ী জানান, নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা প্রদান করেই তারা ফুটপাতে ব্যবসা করছেন। আর এই চাঁদা স্থানীয় হকার্স লীগের নেতাসহ চাঁদার কিছু একটি অংশ অসাধু কিছু পুলিশ সদস্যদের পকেটে যাচ্ছে বলেও তারা জানান। তবে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা চাঁদা গ্রহিতাদের কারোও নাম বলতে রাজী হননি। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের এই অবস্থান সম্পর্কে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মহসিনুল কাদিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি ফুটপাতে কোন ব্যবসায়ী নেই দাবী করে বলেন, ”আজকেও পুলিশ উচ্ছেদ চালাচ্ছে। কই ফুটপাতেতো এখন আর কোন দোকান-পাট নেই”।