নাজনিনঃ বন্ধবান্ধব ছাড়া কি জীবন সুন্দর ও আনন্দময় হতে পারে? পারে না। যদিও অনেকেরই সেরকম বন্ধু বা ‘বেস্টফ্রেন্ড’ থাকে না বা হলেও বেশি দিন টেকে না। তবে বন্ধুত্বের সঠিক রেসিপি জানা থাকলে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকে থাকতে পারে চিরদিন।
আন্তরিকতা
কারো সাথে বন্ধুত্ব হওয়াটা কিন্তু ‘কাকতালীয়’ কোনো ব্যাপার নয়। জার্মান একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ছাত্রজীবনে অনেকে কয়েক বছর পাশাপাশি থাকলেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় না। আবার অনেক সময় কোনো সহপাঠীর সাথে পরে হঠাৎ করে অন্য কোথাও দেখা হলে বা অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা হলে, তার মধ্য দিয়েও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠতে পারে।
খোজখবর রাখা
বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে তার যত্ন করতে হয়, ঠিক প্রেমের সম্পর্ক বা পারিবারিক সম্পর্কের মতোই। নিয়মিত দেখা বা যোগাযোগ হলে তবেই বন্ধুত্ব নিবিড় হতে পারে এবং একে-অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার সুযোগ পায় মানুষ।
বিশ্বাস থাকা
যে কোনো পরিস্থিতি বা বিষয় নিয়ে যদি দু’জনের মধ্যে খানিকটা একইরকমের ধারণা বা মিল থাকে, তাহলে তাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হয়। শুধু তাই নয়, ভালো বন্ধুদের মধ্যে নাকি একই ধরনের ‘জিন’-এ থেকে থাকে, অনেকটা দূর সম্পর্কের ভাই-বোনের মতো। জানান মার্কিন গবেষক নিকোলাস ক্রিস্টাকিস ও জেমস ফাউলার।
প্রয়োজন অন্তরঙ্গতা
যে বন্ধুর সাথে মনের মিল থাকে, তার সাথেই মানুষ বেশি সময় কাটায়। তার ওপর ঘন ঘন দেখা হলে নিজেদের পুরনো কথা বা পরিবারের সুখ-দুঃখের নানা কথার মাধ্যমে অন্তরঙ্গ হওয়া সহজ হয়। এভাবেই দু’জনের মধ্যে বিশ্বাস ও অনুভূতির বন্ধন তৈরি হয়। আর যাকে বিশ্বাস করা যায় না, তার সাথে বন্ধুত্ব করারও কোনো যুক্তি থাকে না। সোজা কথা, সহজভাবে মন খুলে কারো সাথে অনুভূতি শেয়ার না করলে বন্ধুত্ব হতে পারে না।
শ্রদ্ধাবোধ
সব সম্পর্কের মতো বন্ধুত্বের মধ্যেও একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধবোধ থাকাটা জরুরি। শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে কোনো সম্পর্কই বেশি দিন টেকে না। থাকে না বিশ্বাসের জায়গাটাও। তাই নারী, পুরুষ, ছোট, বড় সকলের প্রতি শ্রদ্ধবোধ থাকা দরকার। কারণ এটাই হলো যে কোনো সম্পর্কের ‘চাবিকাঠি’। তাছাড়া বন্ধুকে বদলানোর চেষ্টা না করে, সে যেমন তাকে সেভাবেই ভালোবাসুন, শ্রদ্ধা করুন। দেখবেন বন্ধুটি আপনার সারা জীবন পাশে থাকবে।
শেষ কথা
বন্ধুত্বের মধ্যে অবশ্যই ভালোবাসা থাকতে হবে এবং সে ভালোবাসায় যদি খানিকটা হাসি, ঠাট্টা আর দুষ্টুমি ঢেলে দেন তাহলে তো কথাই নেই! জীবনটা কেটে যাবে মজা, হাসি-ঠাট্টার মধ্যে দিয়ে…।