বৈরাম খা ঃ
বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডের দুর্নীতির বরপুত্র এমডি রেজাউল ইসলাম খান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বাখরাবাদে জনবল নিয়োগ প্রসঙ্গে কথা উঠে। যদিও রিটেন পরীক্ষ স্বচ্ছ হয়ে থাকে প্রশ্নঃ মৌখিক পরীক্ষায় এমডি রেজাউল ইসলাম খাঁন সীমাহিন দুর্নীতি করেছেন বলে তথ্যাদি পাওয়া যায়, এখন প্রশ্ন এমডি আসলে বাখরাবাদের উন্নতি চায় নাকি নিজের উন্নতি চায়।
কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডের এমডি রেজাউল ইসলাম খানের সীমাহীন দুর্নীতির যাতাকলে নিঃস্ব তার অধিনস্ত্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সিএনজি পাম্পের মালিকরা। পান থেকে চুন খসলে অথবা চুন না খসলেও তাকে দিতে হয় টাকা আর টাকা। ঘুষের স্বর্গরাজ্যে তিনি এখন দুর্নীতির মহানায়ক। এমডি হওয়ার সুবাদে রেজাউল ইসলাম খান তার কলমের ডগায় বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ড অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে তার নিয়ন্ত্রনাধীন বাহিরের সিএনজি গ্যাস পাম্পগুলোর মালিকদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেজাউল ইসলাম খান বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডে এমডি হিসাবে জয়েন করার পর থেকেই অফিসের ভিতরে শুরু করেছে দুর্নীতির মহোৎসব। কারনে অকারনে তার জুনিয়ির অফিসারদের কাজের সামান্য ত্রুটি পেলেই তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া যেন তার নেশা ও পেশা। অফিসিয়াল বিধি অনুযায়ী সঠিক ভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন না জুনিয়র কর্মকর্তাদের। জুনিয়রদের কাজে অযথা হস্তক্ষেপ করে চাকুরী যাওয়ার ভয় দেখিয়ে অথবা প্রোফাইলের কাজ পাশ হবে না এমন ইস্যু তৈরি করে ঘুষ আদায় করেন তিনি। তিনি দপ্তরের প্রধান দাপ্তরিক কার্যাবলী পরিচালনা করতে নিম্নের যোগ্যতা ও দুরদর্শিতা হলেই দপ্তর পরিচালনা করা যায়, কিন্তু এমডি রেজাউল ইসলাম খান তা না করে পুলিশ ও র্যাব দিয়ে অফিস পরিচালনা করছেন। সিবিএ, জিএম মার্কেটিং এমনকি অফিসারদের প্রতি রুলার চালানো শুরু করেন। যার প্রেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের মতো প্রতিষ্ঠানে নেমে আসে এক দুর্যোগ মুহুর্ত। বাখড়াবাদ গ্যাস ফিল্ডের ঠিকাদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যে সমস্ত ঠিকাদার শুরু থেকে বাখরাবাদে ঠিকাদারী করে আসছে তাদেরকে এখন রাস্তায় বসতে হবে। যে ঠিকাদার তার দাবী অনুযায়ী ঘুষ দিতে পারবে সেই শুধু তার নিকট থেকে সুবিধা পাবে। প্রতিষ্ঠানের লাভ লোকসান কি ঠিকাদার নির্ধারন করেন নাকি দপ্তরের কর্মকর্তা দেখার মালিক এ ব্যাপারে ঠিকাদাররা বলেন, নতুন এমডি রেজাউল ইসলাম খান জয়েন করার পর থেকেই মনে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে রুপ নিতে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র কর্মকর্তা জানান, রেজাউল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহন করার কিছু দিন পর সিএনজি পাম্মের মিটার তুলে এনে ৩/৪ কোটি টাকা জরিমানা করে দেন। যার ফলে কতিপয় পাম্পের মালিকরা আতংকিত হয়ে পড়ে এত বড় ধরনের জরিমানা দিয়ে পাম্প চালানো সম্ভব নয়। ফলে অন্য মালিকরা তার সাথে লিয়াজো করেন। জনগন ও রাষ্ট্রের চোখ ওয়াশ করতে পাম্পের মিটার খুলে এনে কিছু দিন আটক রেখে আবার পুনরায় ফেরত দিয়ে দেন কোন রকম জরিমানা না করে। তাতে সাধারন জনমনে প্রশ্ন কিসের বিনিময়ে সকালে মিটার খুলে এনে জরিমানা না করে বিকালে ফেরত দিয়ে দেন। যে সকল মিটার চেকাররা প্রতিদিন মিটারের রিডিং লিখে আনে দেখা যায় ২ ঘন্টা আগে তারা মিটারের রিডিং লিখে এনেছেন আবার ২ ঘন্টা পরে মিটার খুলে আনা হলো এবং অলিখিত গোপন জরিমানা করে তাদের ছেড়ে দেয়া হলো। তাতে সচেতন নাগরিকের প্রশ্ন এমডি রেজাউল ইসলাম খান উপঢোকনের মাধ্যমে এই গুলি করেছেন নাকি বাখরাবাদের স্বার্থেই এই গুলি করছেন এমডি নিজেই তা বলতে পারবেন। জানা গেছে, এনার্জি রেগুলেটার কোর্টে জরিমানাকৃত একটি সিএনজি পাম্পের মালিক আপিল করেন এবং মামলাটির মেরিড দেখা যায়, সেই পাম্পের মিটার খুলে আনার ২ ঘন্টা পূূর্বে মিটারের রিডিং লিখে আনেন এবং বড় অংকের জরিমানা করা হয়। আদালত বিষয়টি নিয়ে বিব্রতবোধ করেন। এতে এমডি রেজাউল খানের দুর্নীতি ও দায়িত্বের প্রশ্ন উঠে আসে। পরবর্তী শুনানিতে দেখা যাবে ক্ষতিগ্রস্থ পাম্পের মালিক ন্যায় বিচার পায় কি না। অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানী টিম যে ব্যাপারটি অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, বর্তমান এমডি রেজাউল ইসলাম খান পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস ফিল্ডের অফিসার হিসাবে চাকুরী করতেন। তখন তিনি সীমাহীন দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে ঢাকাতে বড় ধরনের এক আমলার সাথে লিয়াজোর মাধ্যমে অনেক টাকা খরচ করে বরখাস্ত থেকে অব্যাহতি পান। এখন প্রশ্ন যেই ব্যক্তি দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হয়েছিলেন, সেই অফিসার এমডি হয়ে বাখরাবাদের মতো সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানের এমডি হওয়াটা তার ছিল কাল্পনিক। তিনি আসার আগে বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড ছিল লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু রেজাইল ইসলাম খান এমডি হয়ে আসার পর প্রতিষ্ঠানটি যেন রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে রুপ নিয়েছে। কুমিল্লা ঘুরে আমাদের প্রতিনিধি ঠিকাদার, সিএনজি পাম্প মালিক ও সচেতন নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানান, খুব দ্রুত ভুক্তভোগীরা এই এমডি অপসারন চায়।