সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাকর্মীরা সহিংসতা করলে সরকার তা কঠোরভাবে দমন করবে বলে সাফ জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার সময় মঙ্গলবার সচিবালয় এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও সড়কে অগ্নিসংযোগের মধ্য
দিয়ে বিএনপি ফের সহিংসতার দিকে যাচ্ছে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রী । সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, বিএনপি রাজপথে ফের সহিংসতা শুরু করলে সে অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার।
একটা কথা আছে না, ‘যেমন কুকুর তেমন মুগুর’; পরিস্থিতি যেভাবে দৃশ্যমান হবে জবাবটাও সে রকম হবে।’
সচিবালয় এলাকায় মঙ্গলবারের ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আবার রাজপথে ভাংচুর শুরু হয়েছে; এবং বিএনপি আবার এই ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা সহিংসতার দিকেও যেতে পারে।
এখন পুলিশের ওপর দোষ দিচ্ছে, পুলিশকে উসকানি তারা কেন দিল? আদালতে গেলেও তারা গোলমাল পাকায়, নিজেরা নিজেদের সঙ্গে হাতাহাতি করে, মারামারি করে। গতকাল (মঙ্গলবার) তারা রাস্তায় অবরোধ করতে গেছে, পুলিশ তো বাধা দেবেই।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর ভোট ঠেকাতে বিএনপির আন্দোলনের সময়ে যে সহিংসতা হয়েছিল, দলটি আবার সেই চর্চা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে- পুলিশের মোটরসাইকেল পোড়াল, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, জনগণের কী অপরাধ- যাদের গাড়ি ভাংচুর হলো? বিএনপি কেন এই প্র্যাকটিসটা আবার শুরু করেছে? বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, ভাংচুর- এটা কি আবারও সেই অশনি সংকেত, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা তারা শুরু করেছিল।
আন্দোলন করতে না পেরে বিএনপি আবারও সহিংসতার দিকেই যাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বার বার আদালতে গিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার পরেও জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। কাজেই তারা বিকল্প হিসেবে সহিংসতার দিকে যেতে পারে, এটা অনুমান করা তো মিথ্যে নয়। তার ইন্ডিকেশন তো গতকাল আমরা দেখলাম।
বিএনপি নেতাকর্মীরা সহিংসতা চালিয়ে কেন রাস্তায় কয়েক ডজন গাড়ি ভাংচুর করেছে এবং বিএনপি আবারও সহিংসতা দিকে যাচ্ছে কি না- দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে সেই প্রশ্ন রাখেন কাদের।
‘আগাম নির্বাচনের পরিকল্পনা নেই’
সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলছেন, আগাম বা মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা ও পরিকল্পনা তাদের নেই।
আমি বলেছি, নির্বাচন যদি এক মাস বা তিন মাস পরেও হয় আমরা প্রস্তুত। তবে যথাসময়ের আগে নির্বাচন হবে এমন কোনো পরিকল্পনা এখনও সরকারের নেই; এবং আমরা দলীয়ভাবেও সেই চিন্তা ভাবনা করছি না।
কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমরা প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নিতে শুরু করেছি। এখন আমাদের নির্বাচনের জেলা পর্যায়ে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বিএনপি এখনও সহায়ক সরকারের দাবি তুলছে, দলটি নির্বাচনে আসবে কি না- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি তো বলেছে যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে আসবে।
“… ষোড়শ সংশোধনীর রায় কি সরকার দিয়ে দিল, তখন বিচার বিভাগ স্বাধীন। ন্যায় বিচার কাকে বলে? খালেদা জিয়ার সাজা হলে ন্যায় বিচার পাবে না। সাজা না হলে বিচার বিভাগ স্বাধীন। এটাই তো তাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সংজ্ঞা।
খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে কাদের বলেন, (এই পরিকল্পনা আছে কি না) এটা আদালতকে জিজ্ঞেসা করতে বলুন। বিচার বিভাগ স্বাধীন, আদালতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে কাদের বলেন, এই মামলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আর মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করছি।