অপরাধ বিচিত্রা প্রতিবেদকঃ বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। আমরা মনে করি, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। একই সঙ্গে এটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, বিইআরসি হচ্ছে সরকারের আদেশ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের একটি প্রতিষ্ঠান। গণ-শুনানিটা ছিল একটা আনুষ্ঠানিকতা এবং একধরণের নাটক।তিনি বলেন, বিইআরসির যদি গণশুনানির প্রতি সম্মান থাকত তাহলে তারা বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে কমানোর উপায় বের করত। কারণ গণশুনানিতে তথ্য, প্রমাণ, যুক্তি বিদ্যুতের দাম কমানোর পক্ষে অনেক শক্তিশালী ছিল। বিদ্যুতের দাম না কমিয়ে উল্টো দাম বাড়ানোর ফলেই বোঝা যায়, তারা সরকারের নির্দেশ পালনের জন্য এই গণশুনানিটা করেছে এবং তা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক ছিল।সরকার আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে এমন মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।এক প্রশ্নের জবাবে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা যে সব যুক্তি দেখিয়েছেন সেগুলো ভুল। তার দেওয়া যুক্তিগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে, গ্যাসের সংকটের কারণে তেলের ব্যবহার করা হচ্ছে, সেজন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এই তথ্যটি সঠিক নয় এ কারণে যে, গ্যাসের সংকট হলেও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে যেখানে কম দামে বিদ্যুত পাওয়া যায় সেখানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়, আবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেখান থেকে বেশি দামে বিদ্যুত কিনতে হয় সেখানে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।
যার ফলে আমাদের বিদ্যুতের দাম বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি উপদেষ্টা আরেকটি কথা বলেছেন যে, তেল ব্যবহারের কারণে নাকি বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেছে। এ কথাটাও সঠিক নয়। কারণ তেলের দাম যদি সমন্বয় করা হতো তাহলে বিদ্যুতের দাম আরও অনেক কমে যেত। দেখা যায় যে, বিদ্যুতের দাম বাড়লে যাদের লাভ হবে, সেটা দেশি-বিদেশি কোম্পানী, যারা বিদ্যুত নিয়ে ব্যবসা করবে তাদের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ রক্ষা করা এবং ব্যয়বহুল পথে বিদ্যুত উতপাদন করতে গিয়ে আজকে এই অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির বোঝাটা জনগণের ওপর চাপানো হচ্ছে। এর ফলে জনগণের জীবনযাত্রা ও উতপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। অর্থনীতির প্রতিযোগিতার ক্ষমতা কমবে এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি ক্ষতিগস্ত হবে।