যুদ্ধ হলেই বাড়ে অস্ত্রের বাজার। সেই সুযোগ নিতে মরিয়া হয়ে থাকে পরাশক্তিগুলো। এতদিন এই বাজারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো শক্তিশালী দেশগুলোর আধিপত্য থাকলেও ক্রমেই তা ফিকে হয়ে আসছে।
মূলত উচ্চমূল্য ও প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে অনেক দেশই নিজেদের প্রতিরক্ষা খাতে সহজলভ্য সমরাস্ত্রের জোগান দিতে মরিয়া। আর সেই সুযোগকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে তুরস্ক।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল মাসে তুরস্কের মাসিক সমরাস্ত্র রপ্তানি রেকর্ড ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ৮২৬ কোটি তার্কিশ লিরার সমপরিমাণ স্পর্শ করেছে। তার্কিশ প্রেসিডেন্সি অব ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি হালুক গোর্গুন এমন তথ্য দিয়েছেন।
তুর্কি এ কর্মকর্তা জানান, তুরস্ক উচ্চপ্রযুক্তির প্রতিরক্ষা রপ্তানি খাতে শুধু স্থিতিশীলতাই অর্জন করছে না বরং প্রতি কেজি সরঞ্জামের মূল্য রেকর্ড ৬৫ ডলারের বেশি ছাড়িয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত তার্কিশ ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের রপ্তানি গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় তুরস্কের অস্ত্র রপ্তানি থেকে মোট আয় হয়েছে ২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
গেল কয়েক বছরে তুর্কি প্রতিরক্ষা শিল্পে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ গেল দুই দশকের মধ্যে তুরস্কের সমরাস্ত্র শিল্পকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। মূলত পশ্চিমা অস্ত্রের ওপর থেকে নিজেদের নির্ভরশীলতার মাত্রা কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে আঙ্কারা।
সে লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে নিজস্ব প্রযুক্তি, প্রকৌশলকে কাজে লাগিয়ে বিধ্বংসী সব সমরাস্ত্রের উদ্ভাবন করছে তুর্কি বিজ্ঞানীরা।
তুর্কি গণমাধ্যমের বরাতে দেখা যায়, গেল কয়েক দশকের তুলনায় তুরস্কের সমরাস্ত্র খাতে বিদেশ নির্ভরতা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ শতাংশে।
উপরন্তু বেড়েছে রপ্তানি সক্ষমতা। গেল বছর প্রতিরক্ষা খাত থেকে মোট ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে আঙ্কারা।
রপ্তানি ছাড়াও আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ শুরু করেছে তুর্কি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে রপ্তানির পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও নিজেদের সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখছে তুর্কি কোম্পানিগুলো, যা এসব বাজারে পশ্চিমা অস্ত্রের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে আসবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।