বিশ্ববাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে শেষ হল আখেরী মোনাজাত। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের ৩৫ মিনিটের আখেরী মোনাজাতে আল্লাহর কাছে সকল গুনাহ ক্ষমা চেয়ে লাখ লাখ মুসল্লী আমিন আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলে ঐতিহাসিক তুরাগ নদীর তীর সহ আশপাশ এলাকা।
মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা জুবায়ের হাসান।
আজ বেলা ১১টা ১০ মিনিটে শুরু হয় মোনাজাত। শেষ হয় পৌনে ১১টা ৪৬ মিনিটে।
৩৫ মিনিটের মোনাজাতে লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। এ সময় আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয় তুরাগ পাড়। দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসল্লিরা। মোনাজাতে লাখ লাখ মুসল্লির ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে পুরো টঙ্গী প্রকম্পিত হয়ে উঠে।
মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব ও তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা জুবায়ের । মোনাজাতে তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করেন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো বাংলায় মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে বিশ্ব শান্তি ও কল্যাণের পাশাপাশি ইমান- আমলের জন্য মেহনত ও আত্মশুদ্ধির জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়। এর আগে মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে দিক নিদের্শনামূলক হেদায়াতী বয়ান করা করা হচ্ছে।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমা ময়দান ও এর আশেপাশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ভোর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবেন লাখো দেশ বিদেশের মুসল্লি।
মোনাজাত উপলক্ষে শীত উপেক্ষা করে তুরাগ তীরে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় ভোর থেকেই সবাই দলে দলে পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে আসছেন।
এদিকে আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ভোর থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মীরের বাজার থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
ইজতেমার ময়দানের বাইরে অবস্থানকারী মুসল্লি ও পথচারীদের মোনাজাতে শরিক হতে ইজতেমা ময়দানের বাইরে আশেপাশের এলাকায় শতাধিক মাইকের সংযোগ দেয়া হয়েছে।
মোনাজাত অংশ গ্রহণের সুবিধার্থে ১৬টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তায় কাজ করছে অন্তত ১০ হাজার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা অংশ নিয়েছেন। এই বিশ্ব সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। দিল্লি মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নেবেন এই পর্বে।
এদিকে অসুস্থ্য ও বার্ধক্যজনিত কারণে আরও দুই মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রথম পর্বে ১১ জন মুসল্লি মারা গেছেন।