ভিক্ষাবৃত্তি আজ যেন চাঁদাবাজীতে রূপ নিয়েছে হিজরা-বেদেদের দৌরাত্ব্যে নগরবাসী অতিষ্ট

0
1722

মোঃ রাসেল কবিরঃ হিজরা-তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষ গুলো পরিবার আত্মীয় স্বজন ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদাভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। শারীরিক গঠন-অঙ্গভঙ্গী কথা বার্তায় অসগ্লতার কারনে নিজের আপন ভাই বোন এমন কি মা-বাবা পর্যন্ত সমাজে হেয়পতিপন্ন হওয়ার ভয়ে, চক্ষু লজ্জার কারণে ঘর থেকে বের করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। আর সঙ্ঘবদ্ধ হিজরা সম্প্রদায় জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার তাগিদে হাটে-বাজারে কোন বাড়িতে নবজাতক শিশু জন্মের খবরে নাচ-গান করে যা পেত তাই দিয়ে কোন রকমে দিন যাপন করত। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এই সম্প্রদায়ের শারীরিক শক্তি ও সুঠাম দেহি হওয়া সত্ত্বেও কেউ চাকুরী দিতে চায় না। তাই অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তি করেই তাদের দিন চলছিল। ভালই কাটছিল তাদের সুখ-দুখের দিনগুলো যখন থেকে মেয়েলি আচরণকৃত পুরুষেরা অপারেশন করে(নকল হিজরা সেজে) হিজরাদের খাতায় নাম উঠানো শুরু করল হিজরাদের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বারতে লাগল। আর তখনই হিজরারা সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠল। ভিক্ষাবৃত্তির স্থলে শুরু হলো চাঁদাবাজি। এখন আর কোন হিজরা কারও দয়ার উপর নির্ভরশীল নয়। দোকনদার, মার্কেট মালিক, ক্লিনিক হাসপাতাল থেকে শুরু করে থানা পুলিশ পর্যন্ত তারা সাপ্তাহিক চাঁদা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ যেন এক অঘোষিত টেক্স। যদি কেউ দিতে রাজি না হয় বা অস্বীকৃতি জানায়, তার উপর যেন নেমে আসে হিজরাদের অশ্লিল গালা-গালি আর অশালিন অঙ্গ-ভঙ্গীর নোংরামি। যেন ছেরে দে মা পালাতে পারলে বাঁচি। আর আখন হিজরারা বিয়ে বাড়িতে নেচে গেয়ে টাকা রোজগার করে না। নবজাতক শিশু জন্মের খবর পেয়ে এখন আর নাচ-গান করে না। বিশাল অংকের টাকা দাবী করে। যা না দেওয়া পর্যন্ত বাড়ির মা-বোন, বৌ, শিশু বাচ্চাদের সামনে চলতে থাকে তাদের অশ্লীলতা। থানায় ফোন করলে বলে দেয় কিছু দিয়ে বিদায় করে দেন। সমাজ বিজ্ঞানীদের আসংখ্যা এভাবে চলতে থাকলে আর এখনই যদি তাদের লাগাম টেনে ধরা না হয়, তা হলে ভবিষ্যতে তারা মাদক ব্যবসা, অস্ত্রের ব্যবসার মতো বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পরবে। বেদে নৌকায়-নৌকায় ঘুড়ে বেড়ানো মানুষদের এক সম্প্রদায়। আজ এই নদীর তীরে তো কাল অন্য নদীর তীর বা খালের পাড়ে। যাযাবর এই সম্প্রদায়কে আমাদের সমাজে বেদে, বাইদ্যা বা বাইদ্যানি বলে থাকে। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির মানুষগুলো আগে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করত সাপের খেলা, যাদু খেলা দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ বিনোদন দিয়ে, শিংগা বসিয়ে, চুড়ি বিক্রি করে, জোকের তেল, শেকড় বাকড় ও তাবিজ-কবজ বিক্রি করে। কিন্তু আজ সেই বেদে সম্প্রদায়ের মেয়েরা দল বেঁধে (প্রতি দলে ৮-১০ জন) রাজ পথে নেমে নগরের পথচারিদেরকে আটকিয়ে (এসময় তাদের হাতে থাকে বিভিন্ন রকম কৌটা/ ডিব্বা, যাতে থাকে সাপ বা তাবিজ কবজ জাতীয় কিছু) টাকা দাবী করে। এতে পথচারিরা দারুনভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরে, এবং বেদে মেয়েরা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তাকে ছারে না। অবশ্য তাদের কথায় বা ব্যবহারে হিজরাদের মতো হুমকি-ধামকি থাকে না। অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির মতো অনুনয় বিনয়ের শুরু বলতে থাকে-‘‘দেনারে রাজপুত্র, তুই তো রাজার ছেলে, তোর তো রাজকপাল, দে না ২০ টাকা দে, একটা গরিব মেয়ের বিয়ে’’। আশ্চর্য়ের বিষয় হলো সকল বেদে মেয়ে সব মানুষকে এই একেই কথা বলতে থাকে এবং পথচারির সাথে হাটতে থাকে। কোন কিছুতেই তাদের বুঝানো যায় না। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কিছুতেই ছাড়া পাচ্ছে না সাধারণ মানুষগুলো। যেন বেদে সম্প্রদায়ের ওই মেয়েগুলোর কাছে নগরবাসি জিম্মি হয়ে পড়েছে। তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা রমনা পার্ক, সোহরাউর্দ্দী উদ্দান, চন্দ্রিমা উদ্দান। ওইখানে তারা খুজে বেড়ায় প্রেমিক-প্রেমিকা জোগল অথবা বেড়াতে আসা কোন পরিবারকে। পেয়ে গেলেই কেল্লা ফতে চার দিক থেকে ঘিরে ধরবে এবং দাবীকৃত টাকা আদায় করে ছাড়বে। এতে তারা যত বিরক্ত হোক বা ধমক-ধামক দিক না কেন। পরিশেষে ভূক্তভোগিরা বিরক্ত কষ্ঠে শুধু বলে, এদেরকে(বেদে-হিজরা) নিয়ন্ত্রণ করার মতো সরকারের কেউ কি নেই।

Advertisement
Advertisement

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here