শামসুদ্দোহা প্রিন্স: পিরোজপুর জেলাধীন মঠবাড়িয়া উপজেলার অলিতে গলিতে এবং পৌরসভা সহ প্রতিটি ইউনিয়নে প্রত্যেক ওয়ার্ডে অবাদে চলছে ইয়াবা সহ অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যর অবাধে বিক্রি ও সেবন। মঠবাড়িয়া উপজেলার যে সব এলাকায় ইয়াবা বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ সেই সকল এলাকা গুলোর নাম লোকমুখে টেকনাফ নামে খ্যাতি অর্জন করেছে। মঠবাড়িয়া উপজেলাটি দক্ষিন বাংলার ইয়াবার শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। যার কারনে পার্শবর্তী বামনা, পাথরঘাটা ও ভান্ডারিয়া উপজেলা সহ অন্যান্য এলাকা গুলো ইয়াবার তীর্থস্থান হিসেবে মঠবাড়িয়া পরিচিতি লাভ করেছে। মঠবাড়িয়া উপজেলায় মাঝে মাঝে দু‘একজন ইয়াবা সেবনকারী ধরা পড়লেও এর মূল ব্যবসায়ীরা ঘুরে বেড়ায় প্রশাসনের নাকের ডগায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, এখানকার প্রায় ৮০ ভাগ স্কুল, কলেজ পড়ূয়া ছাত্র যুবক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের সাথে জড়িত নেতা কর্মিরা এই মরননেশা ইয়াবায় আশক্ত হয়ে পড়েছেন। ইয়াবা সেবন কারী ও ব্যবসায়ীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও কয়েক দিনের মধ্যে জামিনে বেড়িয়ে পরে একই কাজে লিপ্ত হয়ে পরে। এই ব্যাবসার সাথে ভালো ভালো পরিবারের অনেকেই জড়িত। জড়িত দিত্বীয় শ্রেনীর কতিপয় রাজনৈতিক নেতা যারা এর অর্থ জোগানদাতা। সন্ধ্যা নামতেই বিভিন্ন বিল্ডিং এর ছাদে অলিতে গলিতে বসে ইয়াবার আসর। বিকাল হলেই মঠবাড়িয়া শহরে নেশা খোরদের আনাগোনা বেড়ে যায়। সন্ধ্যা হলেই আর তাদের খুজে পাওয়া যায় না। এমনও দেখা যায় কিছু কিছু নেশাখোর দোকানীরা তাদের ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের সাঁটার চাপিয়ে ভিতরে বসায় ইয়াবার আসর। মঠবাড়িয়া শহরকে ছাপিয়ে ইয়াবার রাম রাজত্ব চলছে প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। প্রত্যেক ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের রয়েছে আলাদা আলাদা প্রতিনিধি। যারা ইয়াবা সরবারাহের কাজে জড়িত। অনুসন্ধ্যানে অারও যানা যায়, মঠবাড়িয়া জনপথ বরিশাল বিভাগের অন্যান্য উপজেলার চেয়ে একটু ধনী ও উন্নত এলাকা যার কারন হিসাবে প্রধানত কারন প্রতিটি ঘর থেকেই সৌদি, কুয়েত ও মালয়েশীয়া সহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছে অনেক প্রবাসী। তাই এখানকার পরিবার গুলোর কর্তার দায়িত্বে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা। মায়ের শাষন ছেলেরা না মেনে ধীরে ধীরে লেখা পড়া ছেড়ে দিয়ে বখাটে হয়ে যায় এবং ইয়াবার মত নেশা যাতীয় দ্রব্যে আশক্ত হয়ে পড়ে। এলাকার সুধী সমাজ ও আমাদের তথ্য মতে মঠবাড়িয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইয়াবা ব্যাবসার তীর্থ স্থানের নাম হচ্ছে উত্তর মিঠাখালী, আমড়াগাছিয়া, বড় মাছুয়া, ধানী সাফা সহ বেশ কয়েকটি এলাকা। এই এলাকাগুলো ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের অন্যতম তীর্থস্থান হিসাবে পরিচিত। চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য এলাকা থেকে ইয়াবার চালান এই সব এলাকায় প্রবেশ করে। এবং এখান থেকেই তাদের প্রতিনিধিরা অন্যান্য এলাকায় ইয়াবা প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরবারাহ করে। ইয়াবা নিয়ন্ত্রনে স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন সময় পুলিশ, র্যাব, মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ও গোয়েন্দা সংস্থা মঠবাড়িয়া ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের তালিকা করে থাকলেও ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের মূল হোতারা এক অলৌকিক কারনে প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাহিরে। মঠবাড়িয়া থানা প্রশাসন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনে সফলতা জাহির করলেও মাঠ পর্যায়ের চিত্র সম্পুর্ন ভিন্ন। যুব সমাজের ৮০ ভাগ যুবক এ এলাকায় সর্বনাশা ইয়াবায় আশক্ত তাই আইন শৃংখলা বাহিনী এ বিষয় জরুরীভাবে জোড়ালো পদক্ষেপ না নিলে ভবিষৎ মঠবাড়িয়ার পরিবেশ আরো খারাপের দিকে যাবে বলে মনে করেন সাধারন জনগন। তাদের মতে, মঠবাড়িয়ায় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এ এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বার বার তুলে ধরলেও প্রশাসনের দুর্বলতায় তা আবার খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হয়। গত সাত মাসে আইন শৃংখলা যদি তুলে ধরা হয় তবে দেখা যায় এপ্রিল মাসে ৪টি ,জুলাই মাসে ৩টি ও আগস্ট মাসে ৩টি খুনের ঘটনা ঘটছে এবং ৩টি ধর্ষন, ২টি ডাকাতি, অপহরন ১টি, চুরি ১২টি ও মাধক ৪১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে যেমন ঊর্মি হত্যা, বি এন পি নেতা হাবিব হত্যা ও নাজমুল হত্যা এ মামলা গুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় মঠবাড়িয়ার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি কতটা ভালো । এর মুল কারন হিসাবে মাদককে কুফলকেই দুষলেন সাধারন মানুষ।