স্টাফ রিপোর্টার ঃ
বহুল আলোচিত উচ্চমানসহকারী ও সিবিএ নেতা আবদুল মালেকের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করেছেন রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ তদন্তে চেয়ারম্যানের সহায়া পাচ্ছে না। দুদক সচিব আবু মোঃ মোস্তফা কামাল গত ১১ জানুয়ারী
রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর এ সম্পর্কিত পত্র (স্মারক নং-১৫৩৬ (২) পাঠানোর নয় মাসেও জবাব দেননি তিনি।বরং তার দুর্নীতি বিস্তারে তিনি সহায়তা করে চলেছেন বলে সংস্থা জুড়ে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালেকের বিরুদ্ধে ১৯৮৮ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে চাকুরী পাওয়া এবং ভাটারা, উত্তরা, পূর্বাঞ্চল ও ঝিলমিল প্রজেক্ট এলাকায় প্লট ও জমি কেনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন,ঢাকা অফিস ১১ জানুয়ারী রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের অনুরোধ জানান। কিন্তু নয় মাস পেরিয়ে গেলেও রাজউক চেয়ারম্যান কোন পদক্ষেপ নেননি।
রাজউকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আঃ মালেকের দুর্নীতির ফাইল ধামাচাপা পড়ে আছে। রাজউকের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে কোন প্রকার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেননা রাজউক চেয়ারম্যান। সূত্র জানায়, আঃ মালেক ১৯৮৩ সালে গার্ড পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। রাজউক কর্তৃপক্ষ ১৯৮৮ সালে নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক (টাইপিস্ট) পদে নিয়োগের জন্য ‘দৈনিক বাংলা’য় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাশ বাংলা ও ইংরেজী টাইপে প্রতিমিনিটে গতি ২০ থেকে ২৫ শব্দ টাইপ করতে সক্ষম কেবল তারাই এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। উক্ত পরীক্ষায় ৪৪ জন উর্ত্তীণ হন। তার মধ্যে আঃ মালেক কোন আবেদন করেননি এবং লিখিত পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করেননি। তার আবেদনের কোন রেকর্ড রাউজক কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। অথচ এলডিএ হিসাবে চাকুরী পান মালেক। বর্তমানে উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত আঃ মালেকের দুর্নীতির ব্যাপারে রাজউকে অভিযোগ উঠলেও রহস্যজনক কারনে ধামা-চাপা পড়ে যায়। তিনি গত ২৫ বছর যাবত বসে বসে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। রাজউকের ভোগ্যপণ্য সমিতি হতে অসহায় এতিমদের কোটি কোটি টাকা নিজেরা ভাগ ভাটোয়ারা করে খেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, তিনি বাড্ডা ১২ নং রোডের ১৪ নং হোল্ডিংয়ে ছয় তলা আলিশান বাড়ি বানিয়ছেন কয়েক কোটি টাকা খরচ করে । ভাটারায় এক বিঘা জমি, উত্তরায় ১৭নং সেক্টরে তিনটি প্লট, ঝিলমিল প্রজেক্টে ২টি প্লট, পূর্বাঞ্চলে ২টি তিন কাঠার প্লট, সেক্টর-৫, রোড নং-৯, প্লট-২৬, সেক্টর-১১, রোড নং-৭, প্লট-২১ এবং নিজ গ্রামের বাড়িতে প্রায় ১০০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। এক সময়ের সিকিউরিটি গার্ড আঃ মালেক শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন দুর্নীতি করে। বর্তমানে রাজউকের শ্রমিক লীগের সভাপতি হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলী করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত বছর ঈদুল আযহার পূর্বে দুদক রাজউকের দু-জন প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করে, তার প্রতিবাদে আঃ মালেকের নেতৃত্বে দুদকের একজন সহকারী পরিচালককে প্রশাসনের রুমে আটক করে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দেন এবং দুদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এ দুর্নীতিবাজ নেতা আঃ মালেক। দীর্ঘদিন শ্রমিক লীগের নেতা হওয়ার কারণে শ্রমিক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক পন্থায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজউক থেকে আঃ মালেকের অপসারণ চায়। রাজউকের প্রতিটি শাখাতে আঃ মালেকের তদবীর হুমকি বাণিজ্য থেকে মুক্তি চায় কর্মকর্তারা। দুদক আঃ মালেকের ব্যাপক অনুসন্ধান চালাচ্ছে। কিন্তু দুদকের অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না রাজউক কর্তৃপক্ষ। দুর্নীতিবাজ আঃ মালেকের দুর্নীতির ব্যাপক অনুসন্ধান করছে অপরাধ বিচিত্রা এবং বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য যা আগামী পর্বে প্রকাশ করা হবে।