মোঃ আবদুল আলীমঃ
পত্রিকার পাতায় চোখ রাখলেই সর্বপ্রথম যে সংবাদটি নজরে আসে তা হচ্ছে সিটি ডেভলাপম্যান্ট এজেন্সি নামে পরিচিত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির সংবাদ। এ প্রতিষ্ঠানটিকে অনিয়ম, দুর্নীতি ও জনহয়রানির কবল থেকে মুক্ত করার জন্য কোন অভিভাবক সর্বদাই অনুপস্থিত। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই কোন না কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে দুদক। অভিযোগ ব্যাপক দুর্নীতি। রাজউকের অনেক চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঢাকা শহরে বেশ কয়েকটি আলীশান বাড়ি, প্রাইভেট কার ও মোটা অংকের ব্যাংক ব্যালেন্সের মালিক। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমেই এ বিশাল সম্পত্তি গড়ে তুলছে একথা দিব্যালোকের মত সত্য। ইমারত পরিদর্শক আবদুর রহিম। রাজউক সূত্রে জানা যায় দীর্ঘ দশ বছর ধরে তিনি একই জোনে বহাল তবিয়তে আছেন। তার আমলে তার জোনে যতগুলো অনিয়মিত বহুতল ভবন গড়ে উঠছে তা অন্য কোন জোনে হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজউক এর উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করেই তিনি দীর্ঘ সময় একই জোনে কাটিয়ে দেন। ২৪-১২-০৯ ইং তারিখে তাকে জোন পরিবর্তন করে ইস্টার্ণ হাউজিং, বনশ্রী, উলন, মেরাদিয়া গোড়ান ইত্যাদি এলাকার দায়িত্ব দেয়া হয়। ০৯-৪-১১ ইং তারিখে একই জোনে দায়িত্ব দেয়ার জন্য পুণরায় অফিস আদেশ হয়। ১৫-২-১৫ ইং তারিখে রামপুরা, ডিআইটি রোডের পূর্ব পাশে পূর্ব রামপুরা, গোড়ান, উলন, মধুবাগ, নয়াটোলা ইত্যাদি এলাকার দায়িত্ব দেয়ার অফিস আদেশ হয়। ০৬-০৬-১৬ ইং তারিখে পূর্ব হাজিপাড়া, মেরাদিয়া, গোড়ান, ইস্টার্ণ হাউজিং, বনশ্রী ইত্যাদি এলাকার দায়িত্ব দেয়ার জন্য রাজউক থেকে অফিস আদেশ হয়। পর পর চারটি অফিস আদেশ তাকে তার বর্তমান জোন থেকে সড়িয়ে আনতে পারেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন নিয়ন্ত্রন এর সদস্য, পরিচালক ও অপরাপর কর্মকর্তাদেরকে তিনি মাসোহারা দিয়ে একই জোনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ফাইল গায়েব, হত্যা মামলাসহ জালজালিয়াতির মামলা রয়েছে। একটি সূত্রে জানা যায় ১/১১ এর সময় দুর্নীতির কারনে তিনি ১৪ মাস জেল হাজতে ছিলেন। তার নামে প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। উত্তরা সেক্টর ১২, রোড ৬/বি, প্লট ৩০ এ ৫ কাঠার বাড়ি আছে। বনশ্রীতে ব্লক এইচ, রোড ২, প্লট ৭ এ ৬ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি আছে। তিনি নিজস্ব গাড়িতে চলাফেরা করেন যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ২৭-৬২২৩। তার অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে সম্প্রতি একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ করার জের ধরে তাকে দুদক তলব করে। এদিকে রাজউক থেকে তার বিরুদ্ধে যাতে কোন ব্যবস্থা না নেয়া হয় সেজন্য কর্মকর্তাদেরকে মোটা অংকের টাকা বিতরন করছেন বলে রাজউকের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। জানা গেছে এ পর্যন্ত তিনি ৩০ লাখ টাকার মত বিতরন করেছেন ঝামেলা এড়ানোর জন্য। এসব ব্যাপারে তার বক্তব্য ও মতামত জানার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন তার নামে কোন বাড়ি বা গাড়ি নেই। কোন কর্মকর্তাকে তিনি কোন টাকাও দেননি। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে অপরাধ বিচিত্রার তদস্ত অব্যহত আছে। পরবার্তি সংখ্যায় এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত থাকছে।