অপরাধ বিচিত্রা: রাজধানীর টয়েনবি সার্কুলার রোডে অবস্থিত রিলায়েন্স ফিন্যান্স লি: প্রতিষ্ঠানটির এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অংগ সংস্থান রিলায়েন্স ব্রোকারেজসহ অপরাপর প্রতিষ্ঠনগুলোর অবস্থাও যাচ্ছে তাই। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে কোটি কোটি টাকা লুট ও বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। একে একে সকল ব্যাক্তির নাম ও পরিচয় বেরিয়ে আসছে অপরাধ বিচিত্রার তদন্তে। অপরাধ বিচিত্রায় পূর্বের সংখ্যায় এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে দেয় ও তার বিদেশ যাবার ওপর নিষেধাজাজ্ঞা জারি করে। তিনি একাধিক ভুয়া কোম্পানি খুলে একাধিক ব্যাক্তির নামে জালিয়াতি করে যাচ্ছেন। এসব কোম্পনিগুলের মধ্যে প্রথমে রয়েছে ওরিয়্যাল ইন্টা: লি:, পি এন্ড এল ইন্টা: লি:, রিপটাইলস ফারম লি:, লায়ন সিকিউরিটিজ লি:, জেফির ইন্টা: লি:, পাইয়ান ইন্টা: লি:, সিমটেক্স, বোরনো ও আরও কয়েকটি কোম্পানি। ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে অনঙ্গা মোহন রায়, আফরোজা সুলতানা ও আরও অনেকে। ভুক্তভোগীরা বলছেন ওপরোক্ত কোম্পানিগুলোর মালিক কারা? কিভাবে রিল্যায়েন্স ফিন্যান্স থেকে কোটি কোটি টাকার ফাইন্যনান্স পেল, কোন প্রকার মর্টগেজ ছাড়া ও উপযুক্ত ডকুম্যান্ট ছাড়া কিভাবে তারা বিশাল টাকার লেনদেন করছে তার তদন্ত হওয়া উচিৎ। প্রশান্ত কুমার হালদার দশটির ওপর কোম্পানি খুলে নিয়ম বহির্ভুতভাবে লিজ ফাইন্যান্স করছে কোম্পানিগুলোকে।
বিও একাউন্ট খুলছে ব্যাক্তি ও কোম্পানির নামে। পাবলিক আমানতের কোটি কোটি টাকা দিয়ে চলছে সিরিয়াল ট্রেডিং, প্রাইজ ম্যানিপুলেশন আর এমডি প্রশান্ত কুমার হারদার হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারন বিনিয়োগকারী ও দেশের আর্থিক খাত/ শেয়ারবাজার। তিনি প্রচুর টাকা ব্যয় করে বিদেশ ভ্রমন করছেন একাধিকবার, নিজের নামে ৪/৫ টা গাড়ি কিনেছেন। কে কে অটোমোবাইলস কোম্পানী থেকে প্রাডো গাড়ি ক্রয় বাবদ ১ কোটি ছয় লাখ টাকা ব্যয় করেন। এত টাকা দিয়ে গাড়ি ক্রয় করার তথ্য রিলায়েন্স ব্রকারিজ সার্ভিসে লি: এর মেমোরেন্ডাম নং আরবিসে/এসিসি/০১-১৩/০০৯ তারিখ জানুয়ারী, ২০১৩ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওয়ান ব্যাংকের চেক নং ৮০১১৭৭৮ তারিখ ২২-০৫ ১৩ ইং এর মাধ্যমে বারনা নামক কোম্পানীকে তিন কোটি টাকা প্রদান করা হয়। একই ব্যাংক থেকে চেক নং ৮১৯২৮০৫ এর মাধ্যমে নাহিদা রুনিকে ১৬ লাখ সাত হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ওরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল লি: কে চেক নং ৮১৯২৮০৪ এ মাধ্যমে ৪৫ লাখ পঁচাশি হাজার নয়শত চল্লিশ টাকা প্রদান করা হয়। রিলায়েন্স ব্রকারেজ সার্ভিসেস লি: এর ট্রেনজেকশন রেকর্ড থেকে জানা যায় জুলাই, ১৩ থেকে ০৪ আগষ্ট, ১৩ পর্যন্ত হিসাব নং আইডিএমএ-ডি ১৬৯০ তে শাহানা ফেরদৌসকে ১ কোটি একষট্টি লাখ সাইত্রিশ হাজার পাঁচশত তিপ্পান্ন টাকা পরিশোধ করা হয়। ১৯৯৭ সানে পিপলস লিজিং এন্ড ফইন্যান্স সার্ভিসেস লি: প্রতিষ্টা হয়। এর বর্তমান পরিচালকদের যোগসাজসে এক হাজার পাঁচশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালে শুরু থেকে অদ্যাবধি নিয়মিতভাবে চেক ডিজঅনার, মুনাফা প্রদানে বিলম্ব, এবং আমানত নগদায়েেনর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হতে থাকে। এই কারণে গ্রাহকগণ অফিসে পাওনা টাকার জন্য দলে দলে ভীড় করতে থাকেন এবং ঝগড়াঝাটি ও উত্তেজনপূর্ন পরিস্থিতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়। তদন্তে জানা গেছে ২০১৫ সালের মাঝামঝি বাংলাদেশ বাংকের সহযোগিতায় পরিচালনা পর্ষদে ন্যাক্কারজনক পরিবর্তন ঘটে এবং পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে সমাজে দুর্নীতিবাজ এবং বিভিন্ন বেনামী কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত হয়ে
কোম্পানি থেকে অভিজ্ঞ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের হুমকি ও মামলার ভয় দেখিয়ে ন্যায্য পাওনা পরিশোধ না করেই অন্যায়ভাবে ক্রমাগত ছাটাই করতে থাকে। এরপর তাদের পছন্দমত লোক নিয়োগ করে। সেব লোকদের যোগ্যতা, গুনাগুণ, সততা বিবেচনা না করেই একটি কুচক্রি মহল নবাগত পরিচালকদের অন্যান্য কোম্পানি থেকে এনে নিয়োগ দিতে থাকে। নতুন নিয়োগকৃত এসব কর্মকর্তা ও পরিচালকদের ব্যবহার ও আচরন ছিল খুবই আপত্তিকর। বিএসইসি অ্যাক্ট অনুযায়ী অত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২ জন ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালক থাকার বিধান থাকলেও পিপলস লিজিং এর পরিচালনা পর্ষদে দীর্ঘ ৪ বছর ৫/৬ জন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর ছিলেন যা সম্পুর্ণ অবৈধ।
সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন আইন অমান্য করে দুইজনের বেশি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর থাকতে পারে না। রিলায়েন্স ফিন্যান্স লি; এর সহযোগি প্রতিষ্টান লিপ্রো ইন্টা: লি: এর নামে বিশালকারের টাকা ব্যয় করে জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থেকে প্রকাশ এক কোটি টাকার সম্পদ থাকা সত্বেও ঢাকার তেজগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি/২০১৯ ইং তারিখে ৩১ কোটি এগারো লাখ টাকা দিয়ে দলিল নং ৫২১/১৯ এবং ১০ কোটি একাত্তুর লাখ একুশ হাজার টাকা দিয়ে দলিল নং ৫২২/১৯ সম্পাদনা করে। এ ব্যাপারে অপরাধ বিচিত্রার তদন্ত অব্যহত আছে। আগামি সংখ্যায় আরও বিস্তারিত থাকছে।