রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ক্ষমতাশীন দলের কতিপয় ‘ভুমিদস্যু’ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় ৫৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে আনিছুর রহমান নামের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কর্তিমারী বাজার থেকে পুলিশ তাকে আটক করে বুধবার জেলহাজতে পাঠানো হয়। আনিছুর রহমান উপজেলার কর্তিমারী বাজারপাড়ার ই¯্রাফিল হকের ছেলে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতি করে সুমন মিয়া নামের এক যুবক তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেন। ওই সাংবাদিক তার মোবাইলে ছবিটি স্ক্রীন শর্ট দিয়ে শাহ কামাল নামের এক যুবলীগ নেতাকে দেখালে হইচই পড়ে যায়। পরে সুমন মিয়াকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঔ ইউনিয়নের ৫ নং ওর্য়াডের যুবলীগ সভাপতি শাহ কামাল। এ ঘটনার প্রায় দেড়মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ ওই সুমন মিয়াকে আটক করতে পারেনি।
এদিকে আব্দুর রহমান নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা বিষয়টি নিয়ে ভিন্নভাবে ‘মাতামাতি’ শুরু করেন। তিনি ওই সাংবাদিককেই আসামী করে নতুন করে অভিযোগ দিতে বাধ্য করেন যুবলীগ নেতা শাহ কামালকে। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ওই সাংবাদিককে আটক করে ৫৭ ধারায় মামলা রুজুর পর বুধবার সকালে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। আনিছুর রহমান দৈনিক সংবাদের রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর মাসে আব্দুর রহমানসহ বেশ ক’জন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ভুমিদস্যুতার অভিযোগ উঠলে সংবাদ প্রকাশ করেন আনিছুর রহমান। তখন থেকেই বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। অবশেষে তিনি তার লক্ষে পৌছতে পেরেছেন বলে উল্লাস করছেন। জানা গেছে, ভুমিদস্যুতা ছাড়াও ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (রৌমারী সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাস্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতির অভিযোগ পেলে আমরা আইজিপি’র অনুমতির জন্য পাঠাই। অনুমতি পাওয়ার পর মামলা করা হয়েছে। আনিছুর রহমানকে আটক করা হয়েছে এবং বাকিদেরও আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা ও আটকের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি রুহুল আমিনসহ অনেকেই। এর প্রতিবাদে রৌমারী প্রেসক্লাবসহ স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন।