ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি তাদের শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা ও ক্যাম্পাস জীবনের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি একটি দৃঢ় বার্তা বহন করে।শিক্ষার্থীরা এই প্রস্তাবনাগুলোর মাধ্যমে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বস্তি নয়, বরং শিক্ষার গুণগত মান, প্রযুক্তিগত সুবিধা, এবং ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিবেশের উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়।প্রথমত, শিক্ষার্থীরা গ্রীষ্মকালীন ২০২৪ সেমিস্টারের জন্য ২৫% ফি মওকুফের দাবি জানিয়েছে, যা বৈষম্মবিরোধী আন্দোলন এর প্রেক্ষিতে তৈরি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। একইসঙ্গে, কোর্স ড্রপ করলে ১০০% ফেরতের প্রস্তাবনাও উত্থাপিত হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও স্বস্তিদায়ক হতে পারে।শিক্ষার্থীরা মিডটার্ম পরীক্ষার পরিবর্তে এসাইনমেন্ট ভিত্তিক মূল্যায়ন এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবি করেছে। তাদের মতে, এটি শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের চাপ কমাতে পারে। একই সাথে, রিপিট, রিটেক, এবং মেকআপ পরীক্ষার ফি ৫০% কমানোর পাশাপাশি গুরুতর চিকিৎসাজনিত কারণে ফি মওকুফের প্রস্তাবনা শিক্ষার্থীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের সহানুভূতির প্রতিফলন ঘটাবে।শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনায় ক্যাম্পাসের দৈনন্দিন জীবনের মান উন্নয়নের দাবি রয়েছে, যেমন ক্যাফেটেরিয়া খাদ্যের মান বৃদ্ধি, পরিবহন সেবার উন্নতি, এবং ল্যাব সুবিধার সম্প্রসারণ। তারা বাইরের খেলার মাঠ তৈরি ও হার্ডওয়্যার ল্যাবগুলোকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করারও আহ্বান জানিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক হবে।অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতি মুক্ত রাখাই সঠিক এবং এতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত হবে।সেই সাথে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সহায়তা ও সমথর্ন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন (SHD) এর পদত্যাগের আর্জি জানিয়েছে শিক্ষার্থীবৃন্দ। বর্তমানে, কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা না করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা আশা করছে, তাদের কণ্ঠস্বর শোনা হবে এবং প্রশাসন দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে, যা শুধু শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নয়, বরং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়ের জন্যই মঙ্গলজনক হবে। এই ২৪ দফা প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন আরও মানসম্মত, স্বস্তিদায়ক, এবং উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। ছবি- সংগ্রহীত