আজকাল অনেকেই বলেন দেড় দুই বছর পার হয়ে যাচ্ছে, তারপরও শিশু কথা বলছে না। অনেক শিশুর এই সমস্যা তিন বছর পর্যন্তও স্থায়ী হচ্ছে। চিন্তিত হয়ে অনেক বাবা-মাই ছোটেন চিকিৎসকের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর সঙ্গে যতো বেশি পরিমান কথা বলা হবে, ততই সে দ্রুত কথা বলা শিখবে। আজকাল শিশুরা বেড়ে উঠছে একক পরিবারে। যেখানে
বাবা-মা ছাড়া তার সঙ্গে কথা বলার কেউ থাকে না। আবার বাবা-মাও নিজ নিজ কাজে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে ছোট শিশুটির সঙ্গে খুব বেশি কথা বলার সময় পান না। একারণেও শিশুরা দেরীতে কথা বলতে শেখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব শিশুর দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয় এবং তাদের সঙ্গে বেশি কথা বলা হয় তারা অন্য শিশুদের তুলনায় দ্রুত কথা বলা শেখে। তাদের সঙ্গে খেলাচ্ছলে কথা বললে তারা খুশি হয়, দ্রুত সাড়া দেয়। তিন বছর বয়সের আগেই একজন শিশুর মস্তিষ্কের শতকরা ৮০ ভাগ বিকশিত হয়। এই বয়সে সে যত বেশি শব্দ শুনবে ততই দ্রুত শিখবে। শিশুদের সঙ্গে একান্ত কিছু সময় কাটান। এই সময় অন্য দিকে মনোযোগ দেবেন না। তাহলে শিশুটিও বুঝবে আপনি তার প্রতি কতটা মনোযোগী। যখন শিশু আপনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবে তখন অন্যদিকে মনোযোগ দেবেন না। সে যদি বুঝতে পারে আপনি তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন, তাহলে সে-ও কথা বলার চেষ্টা করবে। শিশুর চেখে চোখ রেখে কথা বলুন। সে তাহলে আপনার কথার দ্রুত সাড়া দেবে। শিশুর টিভি দেখা সীমিত করুন। বেশি টিভি দেখলেও শিশুর কথা বলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। টিভিতে কারো কণ্ঠস্বর শোনার চাইতে আপনার কণ্ঠ শুনলে তার মানসিক বিকাশ দ্রুততর হবে। আপনি কিভাবে তার সঙ্গে কথা বলেন এটা লক্ষ্য করে শিশুটিও আপনার সঙ্গে সেভাবে কথা বলার চেষ্ট করবে। শিশুর সঙ্গে বেশি গান , ছাড়া বলুন। যখন সে খায়, গোসল কিংবা খেলা করে তখন তার সঙ্গে শিশুদের ভাষায় কথা বলুন। যখন সে হাসবে বা শব্দ করবে তখন তা দেখে তার প্রশংসা করুন, হাসুন। শিশুরা প্রথম কথা বলা তার বাবা-মায়ের কাছ থেকেই শেখে। মনে রাখবেন, আপনার শিশুর সঙ্গে আপনি বেশি কথা বললে কিংবা মনোযোগ দিলে তবেই সে দ্রুত কথা বলা শিখবে। এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তারপরও যদি দেখেন শিশু কথা বলছে না, চোখে চোখ রাখছে না তাহলে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে পারেন।