ষ্টাফ রিপোর্টারঃ সাভারে ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে পুলিশের মাঝ থেকে আশ্চর্যজনকভাবে পালিয়ে গেল এক ভুয়া মহিলা র্যাব। এসময় তাকে বহনকারী প্রাইভেট কারটিও (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-৯০৮৪) আটক করতে পারেনি পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে এই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক ভাবে ঐ নারী সাভারের উলাইলের জনৈক শামীমের স্ত্রী ও ঝুট ব্যাবসায়ী রফিক ওরফে ঝুট রফিকের ভাগ্নি বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সময় এই নারী সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিজেকে কখনো র্যাাব-১ এর উচ্চপদস্থ নারী কর্মকর্তা আবার কখনো পুলিশের উপ-পরিদর্শক বলে পরিচয় দিয়ে আসছিলো। এর আগে সাভারের বিষমাইল এলাকায় পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অটোরিকশা হতে চাঁদার দাবীতে এক অটোরিকশা চালককে বেদম মারধোর করে। সেসময় খবর পেয়ে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিবেদক ঐ ঘটনায় আহত অটোরিকশা চালকের বক্তব্য নিতে চাইলে র্যাব পরিচয়দানকারী ঐ নারী এই প্রতিবেদককে বাধা দেন এবং নিজেকে র্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সেইসাথে বর্তমানে র্যাাব-৪ এর সিপিসি-২ নবিনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জনাব মেজর আব্দুল হাকিমের ব্যাচমেট বলে দাবী করেন। পরবর্তিতে বিষয়টি সন্দেহজনক হলে তা র্যাবকে অবহিত করা হয়। গতকালও সাভারে ঠিক একই ঘটনার জন্ম দেন ঐ নারী। বুধবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকা থেকে মারামারির ঘটনায় আহত আব্দুল জব্বার নামের এক ব্যাক্তিকে চিকিৎসার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ও উপস্থিত ব্যাক্তিদের নিকট নিজেকে প্রথমে পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও পরে র্যাব-১ এর ইন্টেলিজেন্স অফিসার বলে পরিচয় দেন। এসময় এই প্রতিবেদক ও স্থানীয় একজন সাংবাদিকের নিকট নিজেকে পুর্বের ন্যায় র্যাব-১ এর কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে আহত ব্যাক্তির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে বাধা দিলে সাংবাদিকরা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ এর মুখে ঐ নারী র্যাবের পরিচয় পত্র দেখাতে ব্যার্থ হলে পার্শ্ববর্তী সাভার মডেল থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাজমুল হাসান সংগীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ঘটনার সত্যতা পান। পরে ঐ নারীকে পুলিশের সাথে থানায় যেতে বলা হলেও ঐ নারী পুলিশের কথায় কোন কর্ণপাত না করে উপরোন্ত উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তার সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন। এসময় তাকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতে দেখা যায়। এর এক পর্যায়ে ঐ নারী উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাকে পাশে ডেকে নিয়ে কিছুক্ষন আলাপ করেন এবং তার কিছুক্ষন পরেই নিজ গাড়িতে চড়েই ওই নারী একাধিক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান। এসময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের কার্যত কোন ভূমিকা গ্রহন করতে দেখা যায়নি। পরে পুলিশ তার পিছু নিলেও পুলিশের পক্ষে তাকে আর আটক করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ড এবং কোন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসাবে কাজ করছেন ঐ নারী। যেসকল ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তার অধিকাংশই চাঁদার দাবীতে সাধারণ মানুষকে মারধোর ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ড। যেখানে প্রতিবারই ঘটনাগুলো সাংবাদিকদের থেকে আড়াল করার অপচেষ্টা করেন ঐ নারী।