স্টাফ রিপোর্টার
ফেসবুকে অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেয়ার অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে লাকসামের কলেজ ছাত্রী স্মৃতি আক্তার (১৮)। এবং তার মৃত্যুর জন্য একমাত্র আলম নামে এক যুবকের কথা জানিয়ে গেছে সে। আত্মহত্যার আগে এক সুইসাইড নোটে এসব কথা লিখে গেছে স্মৃতি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় অশ্বতলা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে স্মৃতি গলায় ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। এর পর দিন শনিবার পরিবারের লোকজন স্মৃতির লিখে যাওয়া সুইসাইড নোটটি পান। স্মৃতি লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ২য় বর্ষের ছাত্রী।
সুইসাইড নোটে স্মৃতি আত্মহত্যার বিস্তারিত কারন লিখে গেছেন। সুইসাইড নোট থেকে জানাযায়, আলম নামের এক যুবক তাকে প্রায় উত্যক্ত করত। একসময় আলম তাকে হত্যা করারও হুমকি দেয়। বিষয়টি স্মৃতি তার মাকে জানালে তার মা আলমের পরিবারকে বিষয়টি জানায়। এতে আলম ক্ষিপ্ত হয়ে স্মৃতির নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালায়। একসময় স্মৃতির ছবি অশ্লীল ভাবে এডিট করে তা ফেসবুকে পোস্ট করে। এ বিষয়টি স্মৃতি জানার পর লজ্জায় অপমানে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
স্মৃতির মা অহিদা বেগম এ বিষয়ে জানান, লাকসাম পৌরসভার রাজঘাট এলাকার লাল মিয়ার ছেলে আলম বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে উত্যক্ত করত। আলম তার বন্ধুদের দিয়েও পথে ঘাটে ও কলেজে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করত। একসময় আলম তাকে হত্যার হুমকি দিলে স্মৃতি ভয়ে বিষয়টি আমাকে জানায়। আমি আলমের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করলে স্মৃতিকে উত্যক্ত না করতে আলমকে নিষেধ করে তার পিতা। আলম এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্মৃতির নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালায়।
স্মৃতির মা পিতা বেলাল হোসেন জানান, স্মৃতির ছবি অশ্লীল ভাবে এডিট করে তা ফেসবুকে পোস্ট করার অপমানে সে গত কিছুদিন থেকে কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। আমারা কলেজ না যাওয়ার কারন জানতে চাইলে সে কিছুই বলত না। আলমের কারনেই আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে আমরা তার বিচার চাই।
এদিকে লাকসাম থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বোরহান উদ্দিন জানান, আমরা সুইসাইড নোটের হাতের লেখার সাথে স্মৃতির হাতের লেখা মিল রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি। এটি যদি স্মৃতির লেখা হয়ে থাকে তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা নেয়া হবে।