বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সৌদি ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বিশে^র মধ্যে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য চমতকার স্থান। এখানে অতি অল্প খরচে বিশ^মানের পণ্য উতপাদন করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশে
বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সুবিধা জনক বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। সৌদি বিনিয়োগকারীগণ একটি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করতে পারেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীগণ এখন শতভাগ বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। কোন ধরনের বাধা ছাড়াই যে কোন সময় লাভসহ পুরো বিনিয়োগকৃত অর্থ ফিরিয়ে নিতে পারবেন। বাংলাদেশে উতপাদিত পণ্য রপ্তানি ক্ষেত্রে দ্বৈত শুল্কনীতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আইন পাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে উন্নত বিশ^ থেকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা পাচ্ছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উতপাদিত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সে সুবিধাও ভোগ করতে পারবে। সৌদি ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (০৬ ডিসেম্বর) ঢাকার গুলশানে হোটেল আমরিতে এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশে সফররত সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের ২১ সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সাথে বিজনেস মিটিং-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুণ্য হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব ভার প্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধবিদ্ধস্থ বাংলাদেশে কিছুই ছিল না। তিনি ২টি স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম করেছিলেন- একটি বাঙ্গালী জাতির মুক্তি অর্থাত বাংলাদেশের স্বাধীনতা, অপরটি হলো বাংঙ্গালী জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাত বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধ বাংলাদেশ স্বাধীন করে গেছেন, আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সফল ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। একসময় বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ছিল ৯০ভাগ বৈদেশীক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। আজ নিজস্ব অর্থেই বৃহত বাজেট ঘোষণা করা হয়। নিজস্ব অর্থে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একসময় যারা বাংলাদেশকে বলতো- তলাবিহীন ঝুড়ি এবং বিশে^র দরিদ্র দেশের রোল মডেল, আজ তারাই বলছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশ শুধু পাট, চা ও চামড়াসহ মাত্র ২৫টি পণ্য রপ্তানি করে আয় করতো ৩৪৮.৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আজ সেই বাংলাদেশ সাড়ে সাত শত পণ্য বিশে^র প্রায় সকল দেশে রপ্তানি করে সার্ভিস সেক্টরসহ আয় করছে ৩৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ এখন তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বিশে^র মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য সংখ্যা ও বাজার বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি দাড়াঁবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে উভয় দেশের বাণিজ্য ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে সীমাবন্ধ। উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ এগিয়ে এলে এ বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে মিটিংএ বক্তব্য রাখেন, সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের দলনেতা সৌদিআরবের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি গ্রুপ লি.-এর এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোশাবাব আব্দুল্লা আলখাহতানি, সৌদিআরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মশি, বাংলাদেশ ইনভেষ্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অতরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম. আমিনুল ইসলাম এবং এফবিসিসিআই-এর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহীম।