অপরাধ বিচিত্রাঃ ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য “আসুন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই”। ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে শনিবার বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জাতিসংঘ ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে হিসেবে আজ পঞ্চদশ আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস।
দুদক ২০০৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন শুরু করে। যদিও এ বছরই প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দুদক জানায়, ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালনের অনুরোধ জানিয়ে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় সংস্থাটি। পরে সরকার চলতি বছরে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ঘোষণা করে। পাশাপাশি এই দিনটিকে দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে পালনের লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দুদক। সকাল সোয়া ৯টায় কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কমিশনের সামনের সড়কে শান্তির প্রতীক পায়রা ও ফেস্টুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
একই সঙ্গে তিনি কমিশনের মিডিয়া সেন্টারের রক্ষিত রেজিস্ট্রারে নিজ স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। রেজিস্ট্রারটি ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বসাধারণের স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
শনিবার সকাল ১০টায় কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নেতৃত্বে কমিশনের প্রধান কার্যালয় ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, দুদকের প্যানেল আইনজীবী, ঢাকা মহানগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য, গার্লস গাইডস, বয়েজ স্কাউট, আনসার ও বিএনসিসির সদস্যরা সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুর্নীতিবিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
বেলা ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
শিশুপার্ক, গুলিস্তান, ফার্মগেটসহ জনসমাগম হয় এমন স্থানে দুর্নীতিবিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের প্রতিটি মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মানববন্ধন, আলোচনা সভা, তথ্য চিত্র প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মসূচিতে শোভাযাত্রা বের করে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করা যাবে না, তাই শোভাযাত্রা না করে দুর্নীতিবিরোধী মানববন্ধন করছি আমরা। মানববন্ধনে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের উপস্থিত থাকবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের একক কোনো সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দুর্নীতিকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।