অপরাধ বিচিত্রার সাহসী পদক্ষেপে… রাজধানীতে র‌্যাব-২ এর “সেরা সাফল্য”

3
1144

এস.ডি বাবুঃ
অপরাধীদের জন্য সমাজ কলুষিত হয় না, সাধারণ মানুষের নিস্ক্রিয়তার জন্য সমাজ কলুষিত হয়। এটিএন বাংলার টক-শোতে একজন অপরাধ বিশ্লেষক এই মন্তব্য করেন। আরেক সেমিনারে অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক দুঃসাহসিক খ্যাত সাংবাদিক এস এম মোরশদ মন্তব্য করেছিলেন-সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেই বাংলাদেশ অপরাধ মুক্ত হবে। একটি সভ্য সমাজ গড়তে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সংবাদপত্রের ভূমিকা অগ্রগণ্য। এক সময় এদেশে দৈনিক আজাদ এবং সংবাদ, এর বহুদিন পরে জন্ম নেয় ইত্তেফাক সংবাদপত্র।

কিন্তু ‘কালের আবর্তমানে বর্তমানে অজস্র পত্রিকার জন্ম হলেও সভ্য সমাজ গড়তে কোন পত্রিকা কতটা সচেষ্ট তাহা একমাত্র পাঠক সমাজই জ্ঞাত। অপরাধ বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই অপরাধীদের সংবাদ প্রকাশ করা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিকভাবে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে দেশ-বিদেশের পাঠক সমাজের কাছে প্রশংসিত। দূর-দূরান্ত অজপাড়াগাঁয়ের সংবাদ এবং সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একটি ব্যাতিক্রম ক্যাপসন দিয়ে রাজধান সহ সারাদেশে ব্যানার, ফেস্টুন, স্টিকার ছাপিয়ে প্রকাশ করে। ক্যাপসনে লিখা ছিল অপরাধ, দুর্নীতি, মাদক, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজী প্রতিরোধ করুন। দুদক, র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ অপরাধ বিচিত্রাকে অবহিত করুন। মতামত, সমস্যা, সম্ভাবনা ও সাফল্যের খবরও দিন। সারাদেশের অগণিত পাঠক সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অপরাধ বিচিত্রার এই পদক্ষেপে সাড়া দেয়। ই-মেইল ও মুঠোফোনে নানা রকম তথ্য দিতে থাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজধানীর আদাবর থানার যুবলীগের এক নেতা অপরাধ বিচিত্রাকে বিশাল মাদকের একটি তথ্য দেয়। তথ্যটি র‌্যাব-২ এর সিপিসি-১ এর মেজর আতাউর রহমানকে জানালে তিনি তাৎক্ষনিক গোয়েন্দা অফিসার ডি.এ.ডি জাহিদকে ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করার জন্য বলেন। তিনি মাত্র ৪০ মিনিটেই ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তথ্যটির সত্যতা পাওয়ার সাথে সাথে মেজর আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একদল চৌকষ গোয়েন্দাদের নিয়ে ২৮ ঘন্টার রুদ্রশ্বাস ও দুঃসাহসিক অভিযান শেষে উদ্ধার করা হয় স্মরণকালের রেকর্ড পরিমাণ ১২০ কেজি গাঁজা। রাজধানীর ইতিহাসে কোন আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী অদ্যবদি পর্যন্ত এত পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে পারেনি। তারুণ্যভরা মেজর আতাউর রহমান ও অভিজ্ঞ সাহসী ডি.এ.ডি জাহিদের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে অপরাধ বিচিত্রার পক্ষ থেকে তাদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। সিপিসি-১ এর পক্ষ থেকে তথ্যদাতাকে পুরস্কৃত করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় সিপিসি-১ কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে অপরাধ বিচিত্রা। একে-একে উদ্ধার হয় ফেনসিডিল, হিরোইন, ইয়াবা, মদ ও বিয়ার সহ বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য। সোনারগাঁও থানার আলোচিত পুলিশ হত্যার প্রধান আসামী হারুনকে গ্রেফতার করা হয় অপরাধ বিচিত্রার তথ্যে। সিপিসি-১ এর আরেকটি মাইলফলক অভিযান সফল করে ভূয়া ডিবি সদস্য বিডিআর হেমায়েতকে তার ৮ জন সহযোগী সদস্যকে। আটক করে জব্দ করা হয় পিস্তল, গুলি, হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি, ডিবি জ্যাকেট, চাপাতি, মোবাইল ও টাকা। এই ভূয়া ডিবি সদস্যরা সারাদেশের আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর চোখের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। তারা সাধারণ মানুষকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিক সম্মেলন করে সরকারের প্রশাসনের দিকে আঙ্গুল তোলে, এতে সরকারের আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্ত’ কর্মকর্তারা অস্বস্তি প্রকাশ করেন। অবশেষে অপরাধ বিচিত্রার তথ্যে ভূয়া ডিবি সদস্য বিডিআর হেমায়েতকে গ্রুপ সহ ধরলে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। র‌্যাব-২ এর সিপিসি-১ এর চৌকষ বাহিনীর এই সেরা সাফল্যে অপরাধ বিচিত্রা অংশীদার হতে পেরে সকল সদস্য আনন্দিত ও গর্বিত বোধ করছে। যদি এদেশের প্রতিটি পত্রিকা অপরাধ বিচিত্রার মত সাহসিক পদক্ষেপ রাখতো এবং সারাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাতে যদি একজন এই রকম মেজর ও ডি. এ. ডি অফিসার থাকতো তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ হতো অপরাধ মুক্ত।
বিঃ দ্রঃ- উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমতি না থাকায় এই দুই বীরসেনার ছবি প্রকাশ করা সম্ভব হলো না।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen − two =