এস.ডি.জি এর লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে সকল শিশুকে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি আধুনিকভাবে সজ্জিতকরণ করা হয়েছে মোহাম্মদ কবির হোসেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মতলব উত্তর, চাঁদপুর

0
3386

যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত; কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার মান উন্নয়নে আমরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পাঠদান হচ্ছে কিনা তা তদারকি করার জন্য পরিদর্শন করা হচ্ছে। গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উপজেলা পরিষদের সহায়তায় উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। নিয়মিত মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি, ছাত্র, শিক্ষকদের করণীয় নির্ধারণ করার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনায় আগ্রহী হওয়ায় ফলাফল ক্রমান্বয়ে ভাল হয়ে আসছে। অত্র উপজেলায় নকলমুক্ত পরিবেশে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ, সভ্যজাতি ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। সু-শিক্ষায় শিক্ষিত সুনাগরিক গড়ার কারিগর হল শিক্ষক। সুনাগরিক গড়তে শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার শিক্ষা বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখেন। ফলে দিন দিন শিক্ষার হার এবং সৃজনশীল পদ্ধতিতে শিক্ষার মানোন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমান সরকার শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে আসছে। শিক্ষার পরিবেশ ও উন্নত শিক্ষা দান পদ্ধতির ফলে নকল প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই কোমলমতি শিশু কিশোরদের সঠিক পদ্ধতিতে উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকগণ। শিক্ষককে হতে হবে সৎ, চরিত্রবান, দায়িত্বশীল এবং শিক্ষাদানে যতœশীল হতে হবে বলে অপরাধ বিচিত্রার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ তুহিন ফয়েজের সাথে এক সাক্ষাৎকালে একথা গুলো বলেন- মতলব উত্তর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ কবির হোসেন। তিনি আরো বলেন-৬১নং-মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির  জন্য ৬ হাজার মা’দের নিয়ে একটি মা সমাবেশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। আরো উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ  কবির হোসেন ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বেকারত্ব দূরীকরণ ও যুব সমাজকে তথা নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে এ উপজেলায় একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরী বলে তিনি জানান। মতলব উত্তর উপজেলায় সরকারি ১২০টি, নব জাতীয়করণকৃত সরকারি ৫৪টি, ১৫০০ বিদ্যালয়ের আওতায় সরকারি ৭টি, বেসরকারি ২টি, কিন্ডারগার্টেন ৮৪টি, মসজিদভিত্তিক বিদ্যালয় ২৪টি, এনজিওভিত্তিক বিদ্যালয় ২৬টি, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ১০টি সহ সর্বমোট ৩২৭টি বিদ্যালয় রয়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলায় শিক্ষায় সাফল্য ঃ
* শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চিতকরণ। * ঝরেপড়ার হার ০ (শুন্য) এ উন্নীতকরণ। * পুনরাবৃত্তির হার ০.০১১ এ উন্নীতকরণ। * ডিজিটাল কন্টেন্ট ও মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পাঠদান নিশ্চিতকরণ। * প্রাথমিক শিক্ষা চক্রের সমাপ্তির হার ৯৩.১ উন্নীতকরণ। * মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য শতভাগ মিড ডে মিল চালুকরণ। * অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মতলব উত্তর উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ৫১৬ বার মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। * ২০১৬ সালে ১৭৮ জন শিক্ষককে কাব স্কাউট ইউনিট লিডার বেসিক কোর্স প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শতভাগ কাবিংকার্যক্রম বাস্তবায়ন। * প্রতিটি বিদ্যালয়ে কাব দল গঠন নিশ্চিককরণ। * ২০১৪ সালে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১০জন, ২০১৫ সালে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০৫ জন, ২০১৬ সালে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৩৬ জন এ উন্নীতকরণ। * এমডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা বস্তবায়ন। * এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে সকল শিশুকে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি আধুনিকভাবে সজ্জিতকরণ করা হয়েছে। * ৬১নং মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ সুমন আন্তঃ প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় ১০০ মিটার দেীড় ইভেন্টে জাতীয় পর্যায়ে ২য় স্থান অধিকার করে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে রৌপ্য পদক লাভ করে। * সকল বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীর ইউনিফর্ম পরিধান নিশ্চিতকরণ। * বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রতিটি বিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। জেলায় ২০১৬ সালে ভালো ফলাফল করায় জাতীয় ভাবে পুরুস্কার পাওয়ার ক্ষেত্র সৃস্টি হয়েছে। এবার মতলব উত্তর উপজেলায় ৬৩৬ জন সহ পিএসসি পরীক্ষায় চাঁদপুর জেলায় মোট ১০ হাজার ৫শ ৩২জন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের সকলকে এক সাথে কাজ করতে হবে। এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি অভিভাবদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 + ten =