দক্ষিণখানে অবৈধ কোচিং বানিজ্যেঃ-সু-শিক্ষা আজ প্রশ্নবোধন!

0
1463

তনু/ইসমাঈল: রাজধানীর দক্ষিণখানে অলিতে-গলিতে চলছে অবৈধ কোচিং সেন্টারের ব্যবসা। আর এসব কোচিং বানিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণির শিক্ষক মহোদয় যারা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা। সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানতে পারা যায়, এসব কোচিং সেন্টারের মধ্যে দি ব্রাইট ফিউচার কোচিং সেন্টার (মোল্লারটেক), ইয়ানুর কোচিং হোম (গাওয়াইর মাদ্রাসা রোড),গাইড লাইন কোচিং সেন্টার (মোল্লারটেক),উত্তরা কোচিং হোম (কাজি বাড়ি রোড), প্যারাডাইস স্কুল এন্ড কোচিং সেন্টার ( গাওয়াইর স্কুল রোড),উদ্বোধ (গাওয়াইর কাজি বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন),রিড (গাওয়াইর মাদ্রাসা রোড),সিউর সাকর্সেস,হোমটিউটোরিয়াল,জেনুইন কোচিং সেন্টার, দিশারি (১৭৯ প্রেমবাগান,কেসি স্কুলের বিপরীতে),ড্রীম টার্চ কোচিং সেন্টার (তেতুল তলা,হাজী জমির আলী স্কুল রোড,দক্ষিনখান),গুরুজী কোচিং সেন্টার (হজরত আলী নবীন সংঘ রোড,দক্ষিণখান)এ সমস্ত কোচিং সেন্টার গুলোও আবার পরিচালনা করেন স্কুল কলেজের শিক্ষকরাই নিজেরাই। এ সমস্ত কোচিং সেন্টার পরিচালকরা আবার তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনে  বড় সাইন বোর্ড এবং বিভিন্ন দেওয়ালে তাদের কোচিং সেন্টারের নাম দিয়ে কোচিং  বানিজ্যে বিজ্ঞাপনও দিয়ে থাকে তাও চোখে পড়ে। আবার কোন কোন কোচিং সেন্টারে প্রবেশ পথে সিসি ক্যামেরাও দেখতে পাওয়া যায় যাতে বাহিরের থেকে কেউ আসলে যাতে দেখা যায় এবং ভিতরে কোন কোচিং প্রতিষ্ঠানে যদি অপকর্মও করে যাতে অতি সহজে কেউ বুঝতে না পরে পূর্বে থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখে অতি সহজে ধামাচাপা দেওয়া যায়। কোন কোন কোচিং সেন্টারের সাইন বোর্ডে দেখাযায় ৩য় থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পড়ানো হয়,পাস না করলে টাকা ফেরত,১০০% সাকসেস। এ যেন ঔষধ বিক্রেতাদের মত বিফলে মূল্য ফিরত। কোচিং ব্যবসায়িরা যেন শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা করতে এতোই ব্যস্ত যে তাদের সঙ্গে কথাবালারও সময় নাই। কোমল মতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে নিয়ে অভিভাবকরাও বিপাকে পরে যান তার সন্তানদের কোন কোচিং সেন্টারে পড়াবেন। এক একটি কোচিং সেন্টারে ৪ থেকে ৫টি ব্যাচে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে দেখাযায় এবং এক একটি ব্যাচে ১৫/২০ জন ছাত্র-ছাত্রীও পড়তে দেখাযায়। প্রতি জন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া হয় মাসে ২০০-৫০০০ পর্যন্ত। এসমস্ত কোচিং সেন্টারের ক্লাস সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে এমনকি রাত্র সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কোন কোন কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা-পড়া করতে দেখাযায়। যার কারনে রাতে অনেক অভিভাবকদেরকেউ কোচিং সেন্টার থেকে তাদের সন্তানদের নিয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এ কারনে অভিভাববৃন্দরা তাদের সন্তানদের নিয়েও উদ্বিগ্ন। কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারাযায় আমরা তাদের সন্তানদের কোচিং সেন্টারে পাঠাতে বাধ্য তা না হলে তো আমার সন্তান পরিক্ষায় পাস করবে না। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন আলোচনাসভায় কোচিং বানিজ্যকে অবৈধ বলে ঘোষনা করলেও কোচিং সেন্টারে শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য কোন ক্রমেই কমেনি বরং আরো বৃদ্ধি পায়। কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীরা যদি মুষ্ঠিমেয় কিছু বিষয়ে উপরে যদি পড়ে যা পরিক্ষায় পাস করার মত তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখছে ? এ বিষয়ে কয়েকটা কোচিং সেন্টারে শিক্ষক ও পরিচালকদের কাছে জানতে পারাযায় রেজাল্টের মান   ভালো এবং ১০০% এর মধ্যে ৯০% শিক্ষার্থীরাই এ সমস্ত কোচিং সেন্টার থেকে সাফল্যতার সাথে পাস করে। এমকি আরো জানতে পারাযায় কোন ব্যক্তি যদি ছাত্র-ছাত্রী তাদের কোচিং সেন্টার ভর্তি জন্য আনতে পারে তার জন্য কমিশনে ব্যবস্থাও আছে। এমনও কোন কোন কোচিং সেন্টারের মাধ্যমেও অনেক ছাত্রীরাও যৌন হয়রানির মুলক ঘটনার কথাও শুনতে পারাযায়। যা ধামাচাপা পড়ে যায় সমাজে লোক লজ্জার ভয়ে। শিক্ষক হচ্ছে মনুষ গড়ার কারিগর তারাই যদি এ ধরনের শিক্ষা বানিজ্য সহ ঘৃনতর কার্যে লিপ্ত থাকেন তা হলে আগামী ভবিষ্যতে ছাত্র-ছাত্রীরা জাতি কে কি দিবে। এ কোচিং বানিজ্য শুধু দক্ষিণখানে নয় সারা ঢাকা শহরে চলছে। আজকে শিক্ষার্থী আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূন ভুমিকা পালন করবে কিন্তু তারা যদি এ ধরনে কোচিং বানিজ্য শিক্ষকদের ফাঁদে পড়ে তাহলে তারা কি শিখবে বা আগামীতে দেশ পরিচালনার কি কাজ করবে? এদিকে হাইকোর্ট আদেশে কোচিং বানিজ্য বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও তা মনছে না কোচিং ব্যাবসায়িরা। এ ধরনের কোচিং বানিজ্য বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রলায় কতৃপক্ষের কোন জোড়ালো পদক্ষেপও কেনই বা নিচ্ছে না তা বর্তমান শিক্ষিত সমাজের বধ্যগম্য হচ্ছে না। এ ধরনে কোচিং ব্যানিজ্য বন্ধ করার জন্য শিক্ষামন্ত্রনালয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিজ্ঞমহল । তারা মনে করেন কোচিং সেন্টারি যদি পাশ করার  একমাত্র অবলম্বন হয়ে থাকে তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জাতিগঠনের কারিগর শিক্ষকদের মূল্য কি?

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

12 − 11 =