অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে বছরের পর বছর চলছে দখল-উচ্ছেদ খেলা। এই খেলার অবসান না হওয়া পর্যন্ত কোন উচ্ছেদ অভিযানই স্থায়ী ফলাফল বয়ে আনতে পারছে না। বুড়িগঙ্গা নদী ও তুরাগ নদীর দুই পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর পরই তা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। এদিকে উচ্ছেদ পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সংস্থার কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। সম্প্রতি গুলিস্থানে হকার উচ্ছেদ নিয়ে ডিসিসি ও পুলিশের সাথে হকারদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হলেও হকাররা আগের মতই বহাল তবিয়তে আছে। অর্থাৎ যেই দখল সেই দখলই রয়ে গেছে। সম্প্রতি পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় সরকার দলীয় কার্যালয়গুলো বাদ দেয়া হচ্ছে। গত ডিসেম্বর জুড়ে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এই উচ্ছেদের সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, য্বুলীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ প্রভৃতি সংগঠনের নামে গড়া তোলা অবৈধ কার্যালয়গুলো ভাঙা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব উচ্ছেদের ব্যাপারে অন্তরিক নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশ, গত ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে টিসিবি’র সামনের ফুটপাতের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তবে সেখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ২৪ নং ওয়ার্ডের অওয়ামী লীগের ১ নম্বর ইউনিটের একটি কার্যালয় বাদ দিয়ে বাকি সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) থেকে সিদ্দিক মাষ্টার ঢাল পর্যন্ত শতাধিক দোকানপাট, ঘর উচ্ছেদ করা হয়। অথচ দলীয় কার্যালয় বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। তেজগাঁও নাবিস্কো মোড় থেকে কিছুটা ভেতরে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের ২৪ নং ওয়ার্ডের ১০ নং ইউনিটের কার্যালয় সবই ফুটপাতের ওপর। এসব কার্যালয়গুলোর আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও কার্যালয়গুলো রয়ে গেছে। এমনিতেই নদীর পার ও জনসাধারনের জন্য ব্যবহৃত ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে নির্মম খেলা ও কোটি কোটি টাকা ব্যায় নিয়ে বিভিন্ন মহলে অনেক সমালোচনা চলছে। পরিবেশবিদগন বলছেন এধরনের দখল-উচ্ছেদ খেলা বন্ধ করে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে না পরলে শুধু জনগনকে দেখানোর জন্য আই ওয়াশের কোন অর্থ হতে পারে না। তাছাড়া উচ্ছেদের নামে দলীয় বিবেচনায় ছাড় দেয়া ভুক্তভোগীরা মেনে নিতে পারছে না।