প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের ভারত সফরের সাথে বাংলাদেশের পাওয়া না পাওয়া নিয়ে আশা নিরাশার যেন শেষ নেই। অনেক রাজনীতিবিদ মনে করেন এ সফরে বংলাদেশ অনেক কিছু পেয়েছে ও উভয় দেশের সম্পর্ক ক্রমশ উন্নতির দিকে। আবার অনেক রাজনীতিবিদ, গবেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেকটা শুন্য। বিশেষ করে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবন্টন বাংলাদেশের এক নম্বর এজেন্ডা। কিন্তু এ নিয়ে কোন চুক্তি সম্পাদিত না হওয়ায় এ সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তিকে শুন্য দেখা ছাড়া গতান্তর নেই। বিশিষ্ট ব্যক্তিগন আরও মনে কেরন ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতি, বহুল আলোচিত টিপাইমুখী বাঁধ নির্মান ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোন আলোচনা না হওয়ায় গোটা দেশেই এক রকম হতাশা বিরাজ করছে। কারন বর্ণিত এসব অমিমাংশিত বিষয়গুলো জন দাবি। ভারতের সাথে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে তা এখনও জনগনের নিকট স্পষ্ট নয়। প্রতিরক্ষা স্বারক নিয়ে সবাই এক রকম অন্ধকারে। দেশের মালিক জনগন। তাই জনগনকে অন্ধকারে রেখে যে কোন চুক্তি ও সমঝোতা জনগন মানতে চায় না। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্বারক নিয়ে অনেকে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে কেউ কেউ বলেছেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে দেশের সবাই এক ধরনের অন্ধকারে রয়েছে তাই সরকারের উচিত হবে এর পুরো বিষয়টি খোলাসা করা। সরকারের অনেক মন্ত্রী বলছেন যেখানে অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে সেখানে তিস্তা চুক্তির মত একটি চুক্তি না হলে কোন অসুবিধা নেই। প্রবীন অনেক রাজনীতিবিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে আমরা কিছুই পাইনি। তারা বলেন দেশের জনগনের মতামত নিয়ে তারপর চুক্তি করা হোক। দেশের মানুষ চায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান বন্ধ হোক। তাছাড়া তিস্তা ও গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা, টিপাইমুখী বাঁধ, ভাটির দেশ বাংলাদেশের ৫৪ টি নদীর উৎসমুখে ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে এদেশকে মরুকরন করা, সীমান্তে পাখীর মত গুলি করে প্রতিদিন মানুষ হত্যা ইত্যাদি নিয়ে একটি কথাও শোনা গেল না। তাছাড়া ভারত থেকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য ভারত ঋন দেবে এবং ভারতীয় ঋনে ভারত থেকেই অস্ত্র কেনা হবে এটা যেন কৈ এর তেলে কৈ ভাজা বলে মন্তব্য করেছেন অনেক প্রবীন রাজনীতিবিদ। ভারত থেকে অস্ত্র কেনার ব্যাপারে ভারতেরই আগ্রহ বেশি। চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ও ভারম্য রেখে হবে এটাই জনগনের কাম্য। নতুবা দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতির দিকে না যেয়ে অবনতির দিকে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।