প্রসাশনের দৃষ্টি আকর্ষন প্রান আরএফএল গ্রুপের দখল ও দূষনে অস্তিত্ব সংকটে শীতলক্ষ্যা নদী

0
588

মাহবুব সৈয়দ নরসিংদী প্রতিনিধি ঃ
(নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার নরসিংদী, পরিবেশ অধিদপ্তর নরসিংদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ, পুলিশ অফিসার ইনচার্জ পলাশ থানা, চেয়ারম্যান পলাশ উপজেলা, মেয়র ঘোড়াশাল পৌরসভা, আহবায়ক বাচাও শীতলক্ষা নদী আন্দোলন।) নরসিংদী জেলার বুকচিরে বয়ে গেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্রোতস্বিনী শীতলক্ষ্যা নদী। নদী পথে যোগাযোগ ব্যবসা বানিজ্য সহ জীবন উন্নয়নে ভিরাট ভূমিকা ছিল এই শীতলক্ষ্যা নদীর। নদী পাড়ের সোনার জমি গুলি ছিল সবুজ ফসলে ভরা। নদীতে ছিল প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ। এই নদীর তীর ঘেষে ঘরে উঠেছে অসংক্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানা। এসব প্রতিষ্ঠান গুলি ধীরে ধীরে নদীর জমি ভরাট করে দখল করে ফেলেছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের দখল ও দূষনের ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে স্রোতস্বিনী এই নদীটি। মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে এলাকার পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য। বেকার হয়ে পড়েছে শতশত জেলে পরিবার। সরজমিন ঘুড়ে দেখা যায়-প্রান আরএফ গ্রুপ,ক্যাপিটাল পেপার মিল, জনতা জুট মিল, দেশ বন্ধু সুগার মিল, সেভেন রিংস সিমেন্ট, তাওহদী সিমেন্ট, কাজী সিমেন্ট, সেমরী ডাইং, ফৌজী চটকল, প্রান ইন্ডাষ্টিয়াল পার্ক, সহ অসংক্ষ ছোট বড় শিল্প কারখানা আর এসব শিল্প কারখানা গুলির বর্জ্যও সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রথমে প্রান কো¤পানি ব্যাক্তি মালিকানা কৃষি জমি ক্রয় করে পড়ে বর্জ্য, বালি ও মাটি ফেলে নদীর জমি ভরাট করে কারখানার সিমানা বৃদ্ধি করছে। ঘোড়াশাল ও কালীগঞ্জ অংশে শীতলক্ষ্যা নদীর অর্ধেক অংশ দখল করে আছে দেশের বৃহঃতম শিল্প কারখানা প্রান-আরএফএল গ্রুপ। স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৪ সালের দিকে প্রান কো¤পানি শীতলক্ষ্যা তীরে ঘোড়াশালের ঘাগড়া নামকস্থানে ছোট পরিশরে ব্যাক্তি মালিকানা অল্পজমি কিনে সেখানে তিনটি টিনের ঘড় নির্মান করেন। এরপর বর্জ্য ও বালি দিয়ে ধীরে ধীরে নদীটির অর্ধেক অংশ দখল করে নেয়। নদীর তীরে প্রায়-৪ কিঃমিঃ এলাকা জুড়েই রয়েছে প্রান গ্রুপের বিভিন্ন শিল্প কারখানা। শুধু দখল নয়-প্রান গ্রুপ বর্জ্য শোধানাগার (ইটিবি) ব্যবহার না করে সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। পলাশ বাগপাড়া মহল্লার ইদ্রিস আলী বলেন, আগে এই নদীতে গোসল করা যেত, প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। আর এখন নদীর পানি এতোটাই দূষিত হচ্ছে যে এখানে মাছতো দূরের কথা বিশাক্ত সাপও মরে ভেসে উঠছে। এই নদীটি দেখার জন্য কেউ নেই বলে-শিল্প মালিকরা নদী ধ্বংস করতে পারছে। বিশাক্ত বর্জ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে ক্ষেতের ফসল,পানির মাছ,আর এলাকার পরিবেশ। অন্যদিকে-পলাশের ডাংগা শান্তান পাড়া নদীর পাড়ে অবস্থিত ক্যাপিটাল পেপার মিল লিমিটেড থেকে পাইপযোগে লাল রংগের বিশাক্ত বর্জ্য সরাসরি শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হচ্ছে। লাল রংগের এবর্জ্য নদীর পানিকে করে তোলছে রংঙ্গিল! মরে ভেসে উঠছে বিভিন্ন জলজ্বপ্রানী। এই কারখানাটিতে প্রতিদিন-১২০ টন কাগজ উৎপাদিত করা হয়। আর প্রতিটন কাগজ তৈরীতে নূনতম ২৫ টন পানি ব্যবহৃত হয়। এর মধ্য প্রতিদিন ৩০ টন পানি বর্জ্য শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হয়। প্রতিষ্ঠানটির (ইটিপি) থাকলেও বেসির ভাগ সময় বন্ধ রাখা হয় বলে জানা যায়। নদী দখল ও দূষনের ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর নরসিংদী কার্যালয়ে কর্মকর্তারা বলেন, দফায় দফায় একাধিকবার জরিমানা আদায় ও নিষেধাজ্ঞার পরও যদি শিল্প কারখানা গুলি শীতলক্ষ্যা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ না করে তা হলে পুনুরায় তাদের বিরোদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + 2 =