প্রার্থী বাছাইয়ে তোড়জোড় ছয় সিটি কর্পোরেশনে ভোটের হাওয়া

0
583

সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু * জয়ের ব্যাপারে মরিয়া আ’লীগ ও বিএনপি * ইসির জন্যও অগ্নিপরীক্ষা * ২৮ ডিসেম্বর হতে পারে রংপুরের নির্বাচন * আগামী বছরের শুরুতে বাকি ৫ সিটি

দেশের ছয় সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বইছে ভোটের হাওয়া। আগামী ২৮ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন দিয়ে শুরু হবে ভোটযুদ্ধ। এরপর রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটিতে কাছাকাছি সময়ে নির্বাচন হবে। এ উপলক্ষে এসব এলাকার চায়ের দোকান, অলিগলি সর্বত্রই এখন ভোটের আলোচনা। মহানগরীগুলোতে শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার ব্যানার। শুরু হয়েছে প্রার্থী বাছাইয়ের তোড়জোড়। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না হলেও গোপনে জরিপ চালাচ্ছে বড় দলগুলো। সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে দৌড়ঝাঁপের পাশাপাশি জোর লবিং তদবির করছেন কেন্দ্রে। সব সিটিতেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থীর পাশাপাশি আছে কোন্দলও। বিদ্রোহী প্রার্থীও বেরিয়ে আসতে পারে শেষ মুহূর্তে। একাধিক প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে উভয় দলই। এদিকে জয় টার্গেট করে দু’দলই জনপ্রিয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি কর্পোরেশনে জয়ের বিকল্প ভাবছে না বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। সিটিতে জয়-পরাজয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। যে দল ভালো করবে তারা সংসদ নির্বাচনে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। সেই সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে দুই দলেই মাঠ পর্যায়ের শক্তির মহড়া দেখাবে। ডিসেম্বরে রংপুর সিটির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে ছয় সিটির ভোট শুরু হবে। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর হয় রংপুর সিটির নির্বাচন। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সে অনুযায়ী ১২ নভেম্বর এ সিটির তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ২৮ ডিসেম্বর। ২০১৩ সালের ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল এবং ৬ জুলাই গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে হিসাবে আগামী বছরের মার্চ মাসে চার সিটি এবং পরের মাসেই এক সিটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী প্রার্থীরা এলাকায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ক্ষমতাসীনরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এসব সিটির প্রার্থী বাছাইয়ে হাইকমান্ড এখন ব্যস্ত। তারা কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য কয়েক প্রার্থীকে সবুজ সংকেতও দেয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় কোন্দল রয়েছে তা মেটানোর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদের মনোনয়ন নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি, যথাসময়ে এসব নির্বাচন হবে, প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ অংশ নেবে। তিনি বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে এবার মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হবে। অতীতের সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমরা সামনে কাজে লাগাব। আশা করি, সামনের সব নির্বাচনে আমরা জয়ী হব। এ দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং দেশ পরিচালনায় তার সাফল্যকে মূল্যায়ন করবে। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে নেতাকর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পাশাপাশি ধানের শীষের জনপ্রিয়তা বাড়ছে এমন একটি বার্তাও সাধারণ ভোটারদের কাছে পৌঁছাবে, যা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের পক্ষে নির্বাচনে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন কখনও বর্জন করিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অতীতের মতো এসব সিটিতে ধানের শীষের বিপুল বিজয় হবে। কারণ সরকারের অন্যায়-অত্যাচার, গুম-খুন, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের বিপক্ষে রায় দিতে মানুষ মুখিয়ে আছে। এ দু’দলের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও। রংপুর, খুলনায় ইতিমধ্যে মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। বাকি সিটির প্রার্থীও প্রায় চূড়ান্ত। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও ব্যস্ত সিটি নির্বাচনকে ঘিরে। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ। কারণ এসব নির্বাচন কতটা অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে পারে তার ওপর ইসির ভাবমূর্তি অনেকটাই নির্ভর করবে।

ছয় সিটির মাঠের চিত্র
রংপুর : আগামী ২৮ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ১২ নভেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচন সামনে রেখে রংপুরে চলছে মেয়র প্রার্থীদের জোর তৎপরতা। সব মিলে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভালো অবস্থায় আছে জাতীয় পার্টি। দলটি একক প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ রংপুরে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার পক্ষে একাধিক সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া এরশাদের ভ্রাতুষ্পুত্র ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল আসিব শাহরিয়ারও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। এখানে দলীয়ভাবে কাউকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়নি বলে জানান আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। যারা দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন তার হলেন, জেলা কমিটির উপদেষ্টা বর্তমান মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্ট,ু দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, মহানগর কমিটির সভাপতি সাফিউর রহমান সাফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, মহানগর চেম্বার সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাশেক রহমান। এর বাইরেও সাবেক সচিব জয়নুল আবেদীন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর কমিটির সভাপতি আতাউজ্জামান বাবুসহ প্রায় ১৫ জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপির পক্ষে জেলা কমিটির সহসভাপতি কাওসার জামান বাবলা, যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সভাপতি আবদুস সালাম। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের পক্ষে এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু প্রচারে নেমেছেন।
রংপুরের সম্ভাব্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রশ্ন : রংপুর সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ সরকারকে নিয়োগের বিষয়ে কমিশনে আলোচনা চলছে। তবে তাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কোনো কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা। তাদের অভিযোগ, এ কর্মকর্তার শ্বশুরবাড়ি শ্যামপুর সুগার মিল এলাকার। তার এক শ্যালক প্রকাশ্য রাজনীতিতে জড়িত। তার অনেক ঘনিষ্ঠজন এ সিটি নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুভাষ চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, আমাকে রংপুর বদলি করার পরও কেউ কেউ কমিশনে এ ধরনের অভিযোগ করেছিল, এখনও করছে। আমার শ্বশুরবাড়ি রংপুর সিটি কর্পোরেশনভুক্ত এলাকার বাইরে অবস্থিত। আমার কোনো আত্মীয়স্বজন এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না। আমি সব সময় নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছি, আমার বিরুদ্ধে কেউ আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দিতে পারবে না। আমি আত্মীয়স্বজনকে পক্ষপাতিত্ব করেছি এমন কোনো প্রমাণ নেই।
খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থী নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন সাবেক মেয়র আলহাজ তালুকদার আবদুল খালেক এমপি, খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম এবং নগর যুবলীগের আহ্বায়ক ও খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু। বিএনপির প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা এবং কেসিসির প্যানেল মেয়র-১ আনিছুর রহমান বিশ্বাস। একাধিক প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে উভয় দলই। এরই মধ্যে প্রার্থী হতে অনড় থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা। এ দুই নেতার পক্ষ থেকে নগরজুড়ে পোস্টার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মেয়র পদের প্রার্থিতা নিয়ে দু’দলের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে টানাপোড়েন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির নেতা মো. মুশফিকুর রহমান মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। খোদ পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা দেয়ায় এরই মধ্যে জনসংযোগে ব্যস্ত এ নেতা।
বরিশাল : সিটি নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গনে। আগেভাগেই যার যার দলের মনোনয়নের জন্য চালাচ্ছেন তদবির-লবিং। সর্বশেষ এখানে ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরনকে হারিয়ে এখানে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত আহসান হাবিব কামাল। আগামী নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চাইবেন তিনি। সেই সঙ্গে বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহিন, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, মহানগর বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন। সাবেক মেয়র এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ারের এখানে প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা গেলেও তিনি প্রার্থী হবেন না বলে জানিয়েছেন । বিএনপির মতো আওয়ামী লীগে অবশ্য এতটা মনোনয়ন বিরোধ নেই। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এখন পর্যন্ত আলোচনায় আছেন তিনজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজালুল করিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ এবং ২০০৮-র নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম। তবে তাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সমর্থন অবশ্য সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহর দিকে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে ৩-৪ বছর ধরে মাঠ গোছাচ্ছেন সাদেক। এখানে সাদেককে মনোনয়ন দেয়া হলে বিজয় নিশ্চিত বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
গাজীপুর : আগামী মার্চের দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হিসেবে বর্তমানে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান রাসেল সরকারের নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক এমপি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান মেয়রও ফের নির্বাচন করতে আগ্রহী। জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র পদে মহানগর জাতীয় পার্টি নেতা মো. আশরাফুল ইসলামকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
সিলেট : সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে উভয় দলের একাধিক নেতা মাঠে নেমেছেন। গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবারও দলের মনোনয়ন পেতে পারেন। হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে তিনি প্রচারে নেমেছেন বলে দাবি করছেন। যদিও দলীয় মনোয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আসাদ ও টানা তিনবারের কাউন্সিলর নগর আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ। অন্যদিকে এবারও বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। যদিও সম্প্রতি মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর কেউ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও শেষ পর্যন্ত মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা আর দীর্ঘ না-ও হতে পারে। জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী হিসেবে এককভাবে মাঠে রয়েছেন সাবেক পৌর কমিশনার আবদুস সামাদ নজরুল। নির্বাচনে মেয়র পদে খেলাফত মজলিশ প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে দলীয় প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
রাজশাহী : রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের মহানগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিএনপির মহানগর সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলই এখন পর্যন্ত ঘোষিত প্রার্থী। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড লিটনকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। বিএনপি হাইকমান্ডও বুলবুলকে নির্বাচনে লড়াইয়ের গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচনে জিততে এরই মধ্যে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মাঠে নেমেছেন। গত ঈদুল ফেতরের পর থেকে লিটন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। উঠান বৈঠক করে ভোট চাইছেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। তবে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এখনও পুরোপুরি মাঠে নামতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে আছেন তিনি। এ কারণে নির্বাচনের মাঠে সময় দিতে পারছেন না। চেয়ার সামলাতেই তাকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এছাড়া দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচনী লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছেন বুলবুল।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 − two =