বগুড়ার সেই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে

0
1188

বগুড়ায় নির্যাতনের শিকার কিশোরী ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে ডাক্তারি পরীক্ষায়। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রিপোর্টে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের আলামত পাওয়া এবং তাকে অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় করা ধর্ষণ মামলায় তুফান সরকার ও তার স্ত্রীর বোন পৌর কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকির আরও দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আর তুফানের সহযোগী মুন্না ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার যুগান্তরকে জানান, বৃহস্পতিবার তিনি ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন। এতে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের আলামত পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া রিপোর্টে ছাত্রীকে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। গত সোমবার ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, শুক্রবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় (ধর্ষণ) তুফান, রুমকি ও মুন্নাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবিবের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে মুন্না আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আর তুফান ও রুমকিকে দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এটি এ মামলায় তুফানের তৃতীয় দফা ও রুমকির প্রথম দফা রিমান্ড। পরে মুন্নাকে জেলে পাঠানো হয়। তিনি আরও জানান, আশা ও রুমিকে জিজ্ঞাসাবাদে জেলগেটে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার তাদের আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে সাত দিনের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
ইতিমধ্যে এ ঘটনায় তুফানের সহযোগী আতিক ও নাপিত জীবন রবিদাস ওই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যদিকে নির্যাতিত ছাত্রী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
কিশোরীকে ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ জুলাই ও পরে কয়েকবার ধর্ষণ করে শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান। এ কাজে তাকে সহায়তা করে তার কয়েকজন সহযোগী। বিষয়টি জানতে পেরে তুফানের স্ত্রী আশা ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ ‘একদল সন্ত্রাসী’ ২৮ জুলাই দুপুরে ওই ছাত্রী এবং তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের মারধর করে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেয়া হয়। পরে নাপিত দিয়ে মা ও মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়। মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি নির্যাতনকারীরা। ওরা তাদের ওপর চুরির অপবাদ দেয়। জোর করে স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে ছাত্রীর মা ২৯ জুলাই সদর থানায় তুফান, রুমকি, আশা, রুমাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের দুটি মামলা করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত ৯ জনসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এক আসামি এখনও পলাতক।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

7 − five =