ভোলা সদর উপজেলা উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে অবস্থিত শহীদ সালাম নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, জাল জালিয়াতী অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসি সূত্রে জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরল কুমার সরকার নিয়োগ লাভ এর পর থেকেই ওই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীন সভাপতি ও উত্তর দিঘলদি ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি খোরশেদ আলম মাতব্বরের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতী করে উপবৃত্তি,ভর্তুকি অর্থ উত্তলন ও আত্মাসাৎ, ব্যাংক থেকে চেক এর মাধ্যমে অর্থ উত্তলন, স্বেচ্ছাচারিতার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
এঘটনায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির তৎকালনি সভাপতি খোরশেদ আলম মাতব্বর ভোলা অতিরিক্ত বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন এমপি ৪৭/১৭ ভোলা)। ভোলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১৩ এপ্রিল-২০১৭ইং তারিখে মধ্যে রুপালী ব্যাংক লিঃ ভোলা কর্পোরেট শাখা ম্যানেজারকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।
বিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির আহব্য়াক বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ৭টি চেক এ ২২ হাজার টাকা সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে অর্থ উত্তলন করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির গত ২৭ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে এক সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ ও আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
বিগত ২৫/০৯/২০১৪ তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক সরল কুমার সরকারের বিরুদ্ধে আনিত ০১ হইতে ০৭নং অভিযোগের ভিতিত্তে ভোলা সদর উপজেলার ঘুইংগার হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ অদুদ কে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে অন্য সদস্যরা হচ্ছে সমাজসেবক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোঃ তাজুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে গত ১১/০৮/১৬ইং তারিখে সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থায়ী বহিস্কারাদেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত ১৭জুন ১৭ তারিখে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগন কারন দর্শনো নোটিশ প্রদান করেন। এবং বিগত ২১/০৮/১৪ইং তারিখের কায নির্বার্হী কমিটির সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে ৪লাক্ষ ৩৮ হাজার টাকার অর্থ প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৪মার্চ ২০১২ইং তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট বলে এবং ১১/০৮/২০১৬ তারিখে অনুষ্টিত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক সরল কুমার সরকারকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, বরিশাল এর বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবরে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন বাদী পক্ষের এ্যাডভোকেট মোঃ আশিকুর রহমান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বরিশালের বিদ্যালয়ের পরিদর্শক মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ০৯৭০৮/২০১৬ এবং আপিল আরবিউট্রাশন কমিটির ০১/১২/২০১৬ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ১২তম সভায় ৫নং সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের ৯/৬/১৬ইং তারিখে, ৩৭.০০.০০০০.০৩১.০৪.৩২৬৯৬.৬৯৮ নং পত্রের আলোকে প্রধান শিক্ষক কে স্ব-পদে বহাল ও বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য বলা হয়।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষকের সঙ্ েকমিটি ও স্থানীয়দের সাথে কথার কাটা ও হাতাহাতি হয়।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আমাকে লাঞ্ছিত ও আমার উপর হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাহার মামলা নং ৫৪।
এবিষয়ে তৎকালীন কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম মাতব্বরের সাথে কথা বললে তিনি প্রধান শিক্ষক সরল কুমারের দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন।
ওই কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী তাজুল ইসলামের সাথে আলাপকালে তিনি এক অভিযোগে জানান, প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি চরম আকার ধারন করেছে। বর্তমানে গোপনে এডহক কমিটি গঠন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। যা স্থানীয় ও আমাদের কাউকে বলা হয়নি। এব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলেই উত্তেজিত কথা বার্তা বলেন যা অসামাজিক। এ নিয়েই তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম আরো বলেন, আমি একজন হার্ট এর রোগী। আমাকে হেয়পতিপন্ন করা ও হয়রানির উদ্দেশ্যে অযথা মামলায় জরানো হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানাই।