যাত্রী হয়রানি,ভাড়া নৈরাজ্য,মাদক বহন-বেপরোয়া চালক রাজধানীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা

0
1353

জসিম মেহেদী: রাজধানীর ঢাকার রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এসব অটোরিকশার নেই রুট পারমিট, মিটারও নেই,  এমনকি বাণিজ্যিকভাবে চলার অনুমতিও নেই। তবুও  বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে চলছে শত শত অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা। বৈধ অটোরিকশা মিটারে না চললে শাস্তির মুখোমুখি হয়। কিন্তু অবৈধ এসব অটোরিকশার চালকরা মাস্তানি করে যেখানে খুশি সেখানে চালাচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই। অবিভাবকহীন নগরে সন্ধার পর অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা দেখা যায় অনেক বেশি। এসব গাড়ী লোকাল যাত্রির পাশা-পাশি মাদকের চালান সরবরহ করে থাকে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে লোকল যাত্রি উঠিয়ে ছিনতাইকারীদের কবলে ঠেলে দেয় এসব ভয়ঙ্কর চালকরা। সূত্রে জানিয়েছে, রাজধানীতে অধিকাংশ সিএনজি চালকরা গ্যরেজ মালিকদের ম্যনেজকরে সন্ধার পর গাড়ী চালায়। এরা আসল ড্রাইভার নয়। তারা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এমনকি অনেকে জঙ্গি’র সাথেও জড়িত। এরা অর্থ যোগান দেয়ার জন্য রাতের অন্ধকরে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালাচ্ছে। এসব সিএনজি চালিত অটোরিকশায় একজন যাত্রি থাকলেই তার কোন না কোন বিপাধে ফেলবে ভয়ঙ্কর অটোরিকশা চালকরা। ফলে সবার মুখে মুখে প্রচালিত রাতের অন্ধকরে ( সিএনজি চালকরা) ওরা বেপরোয়া । এসব ভয়ঙ্কর অটোরিকশা চালকরা রাস্তার অন্ধকরে অনিরাপদ স্থানে যাত্রিদের নামিয়ে দেয়। এধরণের বেশি ঘটনা ঘটছে ধোলাই পাড়, শনির অখড়া রয়ের বাগ, মেডিকেলসহ বিভিন্ন স্থানে। গত বুধবার অনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার সময় অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা। যার নাম্বার ঢাকা-থ, ১১-৩৭০৩। এই গাড়ির চালক তার গাড়ীর পিছনে অবৈধ পণ্য বহন করছিল। এরপর মতিঝিল থেকে তিন জন যাত্রি উঠিয়ে রায়ের বাগের উদ্দেশে চলে। এর এক পর্যয় ফ্লাইওভার পাশে এক যাত্রি নামেয়ে আরএক যাত্রি শনির আখড়ায় নামিয়ে দেয়। পরে বাকি একজন যাত্রি রায়ের বাগে নামতে চাইলেও তাকে না নামিয়ে, কিছু দূরে অন্ধকরের মধ্যে গাড়ী থামিয়ে ওখানে নামতে বাধ্য করে ওই চালক। পরে আরো কয়েক জন মুহুর্তে ওখানে জড় হয়। এরপর তার কাছ থেকে মূল্যবান জিনিস পত্র কেরে নেয়। স্থানটি বেশি নিরাপদ না হওয়া পরক্ষণে ওরা কেটে পরে। এভাবে শুধু রায়েরবাগেই নয় সবখানেই হচ্ছে। ফলে সন্ধার পর নিরাপত্তাহীনতায় যাত্রিরা আতঙ্কে থাকে। অবৈধ চালকদের অপরাধ কার্মকান্ডে বৈধ চালকরা বিভিন্ন জটিলতায় পরেণ। এজন্য অনেক চালক ক্ষোভ প্রকাশ করেণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জে থেকে আসা সিএনজি চালিত একটি অটোরিক্সা ঢুকেছে রাজধানীতে। ঢাকা সিটিতে যার ঢুকতে পারারই কথা নয়, সেটি নির্বিঘেœ যাত্রী পরিবহন করছে নগরীতে। নারায়ণগঞ্জে নিবন্ধন পেয়েছে, অথচ এখন চলাচল করছে ঢাকা সিটিতে। শুধু নারায়ণগঞ্জেই নয়, গাজীপুর এমনকি সিলেট জেলার এমন অনেক সিএনজি ঢাকা সিটিতে দিব্য ভাড়া খাটছে বেআইনিভাবে। রাজধানীর মতিঝিল, মালিবাগ, কমলাপুর, মিরপুর, শ্যামলীসহ নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মিটারবিহীন এসব অটোরিক্সা যাত্রীদের কাছে ভাড়া আদায় করছে খেয়ালখুশী মতো। রুট পারমিট না থাকা সত্ত্বেও কোন জাদুবলে চলছেন ঢাকার রাস্তায় এমন প্রশ্নে সটকে পড়লেন এক চালক। কিন্তু অণ্যএক চালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সার্জেন্টদের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই চালাচ্ছেন এসব সিএনজি চালিত অটোরিকসা। আবার কেউ কেউ এমন প্রভাশালীদের ছায়ায় আছেন যে, প্রতিদিন সকালে অফিসে নামিয়ে দিয়ে আসার বিনিময়ে পুলিশে ধরলে তার নাম বলেন। এতে কাজও হয়, ছেড়ে দেয় পুলিশ। তাদের মধ্যে এক চালক জানালেন, প্রতি মাসে ৫-৬ হাজার টাকা দেন বিনিময়ে তিনি  ঢাকা সিটিতে অবৈধ সিএনজি চালান। এরকম তার মতো শত শত অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা ঢাকা সিটিতে চলছে। ফলে ঘটছে অপরাধ কর্মকান্ড। এছাড়া ঢাকার বাইরের চোরা গাড়ী সেগুলোও রাজধানীর পাড়া মহল্লায় মধ্যে লোকাল ভাড়া খাটছে। এখান থেকে স্থানীয় থানা পুলিশসহ রাজনৈতিক নেতাদের ভাগ দিতে হয়। ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চান না। তবে তাদের কেউ কেউ দোষটা চাপালেন অন্যদের ঘাড়ে। তারা জানান, এলাকার যে সকল নেতা কর্মী আছে তাদের মাধ্যমে সমঝোতা করে অবৈধভাবে এসব সিএনজি চালানো হয়। এমন একজন চালক জানালেন, তিনি সার্জেন্টের গাড়ি চালাচ্ছে। অন্য কারো গাড়ি হলে তাকে পাতি (টাকা) দিয়ে চালাতে হতো। এরকম ঢাকার বাইরের সিএনজিগুলোকে ট্রাফিক, সার্জেন্ট, টিআইসহ বিভিন্ন পরিচয়ে সিটিতে চালাচ্ছে। কেউ ধরলেই নির্দিষ্ট সার্জেন্টদের ফোন দিলে ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া মাসোহারা গড়ীর সার্জেন্টদের কাছে গাড়ীর নাম্বার থাকে। তথ্য মতে টি আই কামরুল রয়েরবাগ, শনিরআখড়াসহ বিভিন্ন গ্যরেজর মালিকের মাধ্যমে মাসোহারা নেয়। তার প্রতি মাসে শুধু সিএনজি অটোরিকসা থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন বলে জানা গেছে। এছাড়া টি আই রাজ্জাক বিভিন্ন গাড়ী থেকে মাসোহারা নেন বলে জানিয়েছেন এরাকাবাসি। বর্তমানে ঢাকায় চলাচল করছে প্রায় ১৩ হাজার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে আসা অটোরিক্সার কোন পরিসংখ্যান নেই কারো কাছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × four =