লক্ষ্মীপুরের রামগতি চার সড়কে চলা দায়

0
1314

আতোয়ার রহমান মনির, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরের রামগতির প্রধান চারটি সড়কই এখন  বেহাল দশা। সড়কের  বেশিরভাগ অংশ ভাঙা ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এলাকার হাজার হাজার মানুষকে রাস্তা চলাচল করতে হচ্ছে দুর্ভোগ ও ঝুঁকির মধ্য দিয়ে। এ অবস্থায় রামগতি-আলেকজান্ডার, রামগতি-লক্ষ্মীপুর, রামগতি-নোয়াখালী, রামগতি-পৌর শহরথ এই চারটি সড়কে যাতায়াতে দুর্ভোগসহ প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, গত পাঁচ বছর আগে রামগতি এলাকার কিছু অংশে নামমাত্র সংস্কার কাজ করা হলেও বাকি অংশে কোনো কাজই করা হয়নি। বতর্মানে পুরো সড়কের অবস্থাই বেহাল। সড়কগুলো সংস্কার না করায় ছোট-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এতে প্রাই ঘটছে দুর্ঘটনা। জনপ্রতিনিধিরা প্রতিনিয়ত আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, পাঁচ বছর আগে রামগতি থেকে উপজেলা সদরে আসার প্রধান রাস্তা আলেকজান্ডার-নোয়াখালী ও সোনাপুর সড়কের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের অংশ মেঘনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে। বেড়িবাঁধ ভাঙন ঠেকাতে দুই বছরে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পানি উন্নয়ন  বোর্ডের  সড়ক না হওয়ায় মেরামত করা হয়নি বাঁধের পাশে যাতায়াতের সড়কটি।
সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টিতে চার চাকার গাড়ি আটকা পড়ে কাদায়। চরম দুর্ভোগে পড়েন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা। এ অবস্থায় পর্যটকরা বেড়িবাঁধ দেখতে এসে রাস্তাটি   কোন বিভাগের তা না জেনেই তিরস্কার করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীকে।
জানা যায়, রামগতি-লক্ষ্মীপুর পৌরসভা সড়কের চর হাসান  হোসেন মদিনাতুল উলুম কওমি মাদ্রাসা থেকে চর  সেকান্দর পাটোয়ারীপাড়া  মোড় পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার অংশে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। রামগতি-আলেকজান্ডার সড়কের উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এক কিলোমিটার আরসি নগর সড়কটির অনেক অংশে ইট উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
রামগতি-নোয়াখালী ও রামগতি-পৌর শহরের চর হাসান হোসেন খোশাল মার্কেট এলাকার মো. মোস্তফা মিয়া জানান, হাসপাতালের সামনের সড়কটি জনগণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার এ  বেহাল অবস্থার কারণে হাসপাতালে আসা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কগুলোর সংস্কার কাজ না হওয়ায় তা খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এসব সড়ক দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত  দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা চর সেকান্দর  গ্রামের নাজমা জানান, চিকিৎসা নিতে এসে সড়কের  বেহাল দশা দেখে হাসপাতালে যাননি। গ্রাম্য  চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে বাড়ি  ফেরেন তিনি।
স্থানীয় এলাকার কবির, আলমগীর, সবুজসহ অসংখ্য ভুক্তভোগী জানান, এ সড়কের  বেহাল দশার কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ কারণে রোগী নিয়ে সময়মতো হাসপাতালে যাতায়াত সমস্যার কথা বারবার জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি তারা।
রামগতি উপজেলা  চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ জানান, রামগতি থেকে  জেলা শহর লক্ষ্মীপুর ও  নোয়াখালী যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি মেরামতের জন্য আরও দুই মাস আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে। তবে পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। মানুষ কষ্ট করে বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াত করলেও গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কেন্দ্রীয় আ’লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও (রামগতি-কমলনগর আসনের ) সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলী জানান, অতিশীঘ্রই রামগতির প্রধান চারটি বেহাল সড়কের কাজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে সংস্কারে চলাচল উপযোগী করা হবে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত  ও সহকারী কমিশনার ভূমি অজিৎ  দেব জানান, সড়কটি  মেরামত দ্রুত প্রয়োজন।  মেরামতের জন্য  জেলা পর্যায়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগে প্রস্তাবনা   দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই সড়কটি সংস্কার করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 + four =