লক্ষ্মীপুরে হাইব্রিড নেতা নিয়ে বিশৃংখল আওয়ামীলীগ, নের্তৃত্বহীন বি.এন.পি, গোপনে সংগবদ্ধ জামায়াত- শিবির

0
1667

এস.এম. আওলাদ হোসেন: লক্ষ্মীপুরের রাজনীতিতে হাইডব্রিড নেতা নিয়ে সাংগঠনিক ভাবে বিশৃংখল আওয়ামীলীগ। নের্তৃত্বহীন বি.এন.পি গোপনে সংগব্ধ জামায়াত-শিবির। লক্ষ্মীপুর থেকে আওয়ামীলীগের অলক্ষ্মী তাড়ানোর পত্যয় নিয়ে ২০১৫ইং সালের ০৩রা মার্চ জেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি মাঠে নামে। তৃনমূল পর্যায়ে জিমিয়ে থাকা দলের নেতা কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠলেও বর্তমানে হাইব্রিড নেতাদের কারনে বিশৃংখলা চরম ভাবে ঝেঁকে বসেছে এ দলটিতে। বর্তমানে জেলা সদরে ক্ষমতাসীন এ দলটির সাংগঠনিক কার্যালয়ও নেই। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ জেলায় চারটি আসনে দুইটিতে আওয়ামীলীগ একটিতে তরিকত ফেডারেশন ও একটি জাতীয় পার্টি। লক্ষ¥ীপুর-১ (রামগঞ্জ) সংসদ সদস্য তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম.এ আউয়াল, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নোমান, লক্ষ্মীপুর-০৩ (সদর) আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য এ.কে.এম শাহজাহান কামাল এবং লক্ষ্মীপুর-০৪ (রামগতি ও কমলনগর) আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য আবদুল্যা আল মামুন নির্বাচিত হন। নবম সংসদ নির্বাচনে চারটি আসনে বি.এন.পি জয় লাভ করেছিল।
আওয়ামীলীগের জেলা কার্যালয় শহরের মাদাম এলাকায় থাকলেও ২০১৫ইং সালের জানুয়ারী মাসে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনা হলে পদবঞ্চিত একাদশের নেতা কর্মীরা পেট্রোল ঢেলে আগুন দিলে চেয়ার টেবিল সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে যায়। তখন থেকে জেলায় দলীয় কার্যালয় নেই। ২০১৫ইং সালে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনে গোলাম ফারুক পিংকু সভাপতি ও এড.নুর উদ্দীন চৌধূরী নয়ন সাধারন সম্পাদক হন। নতুন কমিটি এ যাবত দলীয় কার্যালয় নেননি।
বিভিন্ন সময় নেতা কর্মীরা আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম ফারুক পিংকু। নুর উদ্দীন চৌধূরী নয়ন, পৌর মেয়র এম.এ তাহের ও সংসদ সদস্য এ.এক.এম শাজাহান কামাল ও রায়পুরের হাইব্রীড আওয়ামীলীগ নেতা খ্যাত শহীদুল ইসলাম পাপলুর পক্ষে বিবক্ত স্ব-স্ব ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে পৃথক ভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর সফরকে কেন্দ্র করে পৃথক পৃথক পাঁচটি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের অবস্থানের জানা দিয়েছেন নেতারা। সমাবেশ আয়োজনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরছেন জোগান দিয়েছেন হাইব্রিত খ্যাত শহীদুল ইসলাম পাপলু ও আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান। এই দুই হাইব্রিড নেতা নিয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করলে ও তারা দু’জনই প্রধান মন্ত্রীর সভামঞ্চে স্থান পেয়েছেন। মূলত লক্ষ¥ীপুর আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করেন পৌর মেয়র এম.এ তাহের। আর্থিক কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপত্তির ধারে কাছে অন্য কাউকে খুব একটা দেখা যায়না। আওয়ামীলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা সাংবাদিকদের জানান আপাতত দলীয় কার্যালয় নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ব্যক্তিগত কার্যালয় গুলোতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর আগমনকে কেন্দ্র করে ব্যায়ের জন্য অনোয়ার হোসেন খান ও শহীদুল ইসলাম পাপলু ৪০লাখ টাকা দিয়ে আলোচনা এসেছেন। লক্ষ্মীপুরের ত্যাগীরা এতে উপেক্ষিত হচ্ছেন।
২০০৩সালে লক্ষ্মীপ্রু সদর, পৌরসভা, রামগঞ্জ উপজেলা, রায়পুর উপজেলা ও রামগতি উপজেলা শাখা আওয়ামীলীগের কমিটি গটিত হয় ২০১২সালে রায়পুর পৌরসভা, ২০১০সালে রামগঞ্জ পৌরসভা, ২০১৩সালে কমলনসগর উপজেলা ও রামগতি পৌরসভা কমিটি হয়। ২০১৪ সালে সদরের পূর্বাঞ্চলে ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা গঠিত হলেও  সেখানো এখনো দলটির কোন কমিটি গঠন হয়নি।
আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা কর্মীদের মধ্যে হাইব্রীড দুই নেতাকে নিয়ে অসন্তেষ ও বিশৃংখলা প্রতিয়মান।
অন্যদিকে বি.এন.পির অভ্যন্তরীন কোন্দলে সাংগঠনিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে দলটি। জেলা সম্মেলনকে ঘিরে চলছে প্রকাশ্যে গ্রুপিং। কয়েকজন নেতা বছরের পর বছর পদ কুক্ষিগত করে রাখায় ব্যাপক জন সমর্থন থাকা সত্বেও চাঙ্গা হচ্ছেনা রাজনৈতিক মাঠ। জানা যায়, ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্তা¡বধায়ক সরকারের সময় একটি আহাবায়ক কমিটি হয়। ২০০৯ সালে সম্মেলনে আবুল খায়ের ভূঁইয়া সভাপতি, সাহাবুদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক ও এড: হাছিবুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটি করা হয়। এ কমিটি দিয়ে চলছে বি.এন.পির সাংগঠনিক কার্যক্রম। দুই ভাগে বিভক্ত এখন লক্ষ্মীপুরের বি.এন.পির নেতা কর্মীরা। আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও শহিদ উদ্দিন চৌধূরী এ্যানিকে ঘিরে একটি পক্ষ। অন্য পক্ষের নের্তৃত্বে রয়েছে। সাহাবুদ্দিন সাবু ও এড: হাছিবুর রহমান। দৃশ্যত ০৬মে লক্ষ্মীপুরে প্রতিনিধি সম্মেলনে স্থানীয় নেতাদের পক্ষে স্লোগান দেওয়া নিয়ে বিবাধে জড়িয়ে পড়ে নেতা কর্মীরা।
২০১০সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সাহাবুদ্দিন সাবুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এতে তার সাথে শহিদ উদ্দিন চৌধূরী এ্যানির সাথে মতবিরোধ দেখা দেয়। যা এখন প্রকাশ্যে রূপ ধারন করছে।
১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়া লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসেন নির্বাচন করে বিজয়ী হন। পরে তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে আবুল খায়ের ভূঁইয়া নির্বাচিত হন।  ২০১৪সালের ০৫ই জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনে তরিকত ফেডারেশন এর মহা-সচিব লায়ন এম.এ আউয়াল নির্বাচিত হন।  জেলার শুধু রামগঞ্জে নামে মাত্র সীমিত কার্যক্রম রয়েছে এ দলটির। লক্ষ্মীপুর-২ আসনে বিনা প্রতিদ্ধন্ধীতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোঃ নোমান। উল্লেখ করার মত না হলেও দলটির কর্মকান্ড রয়েছে জেলা জুড়ে।
জামায়াত, শিবির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাদের প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও গোপনে সাংগঠনিক ভাবে তারা একটি শক্ত অবস্থানে রয়েছে জেলা জুড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seven − 4 =