শ্যামনগর থানার ওসির দুর্নীতি ৫০ হাজার টাকায় ‘হরিণের মাংস’ হয়ে গেল ‘গরুর মাংস’

0
755

অপরাধ বিচিত্রা প্রতিনিধি

পুলিশ এখন দুষ্টের সেবক আর দুর্নীতির মহরাজা। এমন কোন অপকর্ম নাইু যা তারা করেনা। পুলিশের হাতে পড়ে ‘হরিণের মাংস’ পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে মুহূর্তেই হয়ে গেলো ‘গরুর মাংস’। আর সেই সাথে মুক্তিও পেয়ে গেলো মাংস পাচারকারী যুবক প্রসেনজিত রপ্তান। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুর কামাল মাস্টারের মোড়ে। পুলিশ অবশ্য বলছে হরিণের মাংস পাচারকারী হিসাবে প্রসেনজিতকে আটক করা হয়েছিল। পরে ধারণা হয়েছে সেটি ছিল গরুর মাংস। তাই তাকে প্রাথমিকভাবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটক ওই মাংস পাঠানো হয়েছে ঢাকার মহাখালিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। পরীক্ষায় যদি প্রমাণ হয় সেটি হরিনের মাংস তাহলে মামলা হবে। গ্রেফতার করা হবে প্রসেনজিতকে। জানা গেছে, শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের জেলেখালি গ্রামের রথীন্দ্রনাথের ছেলে ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক প্রসেনজিত রপ্তান রাতে প্রায় ২০ কেজি কাঁচা মাংস একটি বস্তায় করে নিয়ে আসছিলেন শ্যামনগরের দিকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ মাংসসহ তাকে আটক করে। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। এ সময় পুলিশের সাথে ইউপি সদস্য জলিল কাগুজির মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার গোপন চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী পুলিশ ঘোষনা দেয় যে এটা হরিণের নয়, গরুর মাংস। পরে লোক দেখানোর জন্য পরীক্ষার নামে এ মাংস নিয়ে যাওয়া হয় শ্যামনগর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা প্রিয়াংকা কুন্ডুর কাছে। এ বিষয় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি বলেছি টেস্টিং মেশিনে পরীক্ষা না করে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। আজ রোববার বিকাল নাগাদও আমার কাছে ওই মাংসের নমুনা পাঠায়নি পুলিশ। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মান্নান আলি জানান, পরীক্ষার জন্য কাঁচা মাংস কুল বঙ্ েনিয়ম অনুযায়ী প্রাণি সম্পদ বিভাগের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হবে। রেজাল্ট এলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, প্রসেনজিতকে মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাসেমের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। হরিনের মাংস পাচার ও থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জলিল কাগুজি জানান, ছেলেটি পাগলা মতো। আমি চেয়ারম্যানের কথা মতো থানায় তাকে ছাড়াতে গিয়েছিলাম। পুলিশের সাথে টাকা লেনদেন আমার মাধ্যমে হয়নি।

জেলেখালি গ্রামের লোকজন জানান, প্রসেনজিত রপ্তান দীর্ঘদিন যাবত গোপনে ও প্রকাশ্যে হরিণের মাংস বেচাকেনা করে। প্রয়োজনে তার কাছে অর্ডার দিলে সে বাড়িতেই হরিনের মাংস পৌঁছে দেয়। এ জন্য তার নেতৃত্বে একটি গ্যাং রয়েছে। গ্যাংয়ের অপর সদস্যরা শনিবার রাতে পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে গেছে। তবে, প্রসেনজিতের বাবা রথীন্দ্রনাথ জানান, খোকাকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। ঘটনা কী তা আমি জানিনা

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 + 1 =